সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে বাংলাদেশের পুঁজি ২৫২
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের হতাশার কারণ ব্যাটিং দুর্দশা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ঘুরেফিরে দেখা দিল সেই বিপর্যয়। তবে, এবার হতাশার মাঝে কিছুটা আলো দেখিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়ানডাউনে নেমে বাংলাদেশের ঢাল হয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে টেলএন্ডারদের ব্যাটে ভর করে আড়াইশ’র ঘর পার করতে পেরেছে বাংলাদেশ। সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২৫৩ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৫২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রানের ইনিংস খেলেছেন শান্ত। ১১৯ বলে তার মন্থর ইনিংসটিতে ছিল ছয়টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা।
এই সিরিজের প্রথমটি অনায়সে জিতেছে আফগানিস্তান। আজ শনিবার জিতলেই সিরিজ হবে তাদের। এমন ম্যাচে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজ টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ফজলহক ফারুকীর করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই চার হাঁকিয়ে ভালো শুরুর আভাস দেন তানজিদ তামিম। তৃতীয় ওভারে আবারও ফারুকি বোলিংয়ে আসলে পরপর দুবার বাউন্ডারিতে বল পাঠান তামিম।
চতুর্থ ওভারে আসেন আগের দিন বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দেওয়া গজনফার। তার করা ওভারের প্রথম বল ফুল টস পেয়ে লং দিয়ে এবার হাঁকান ছক্কা তামিম। কিন্তু ছক্কার পরের বলেই গজনফারকে দিলেন উইকেট উপহার। টানা শট খেলতে থাকা তামিম এই বলও উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে দেন নবির হাতে। ১৭ বলে ২২ রানে শেষ হয় তার ইনিংস, বাংলাদেশ ২৮ রানে হারায় তাঁদের প্রথম উইকেট।
শুরুর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় জুটিতে প্রতিরোধের আশা জাগায় বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ও শান্ত মিলে সেই পথেই হাঁটছিলেন বড় জুটি গড়ার পথে। কিন্তু ৭১ রানে সেই জুটি ভেঙে বাংলাদেশের প্রত্যাশা ভেস্তে দেন রশিদ খান। সৌম্যকে এলবির ফাঁদে ফেলে এই জুটি ভাঙেন তিনি। ৪৯ বলে ৩৫ রান করে ফেরেন সৌম্য, ৯৯ রানে বাংলাদেশ হারায় দ্বিতীয় উইকেট।
সৌম্যের বিদায়ের পর মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাওহিদের সঙ্গেও জুটি গড়তে চেয়েছেন শান্ত। কিন্তু দুজনের একজনও বেশিক্ষণ টিকলেন না। প্রথমে রশিদ খানের গুগলিতে পরাস্থ হন মিরাজ। আফগান অফস্পিনারের বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ৩৩ বলে ২২ রানে শেষ হয় তার ইনিংস, ভাঙে ৫৫ রানের জুটি।
মিরাজের পরপরই ডিপ স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তাওহিদ। ১১ রান করে নানগেয়ালিয়া খারোটের বলে আউট হন তিনি। মাঝে ৭৫ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। ফিফটি ছুঁয়ে দলকে টানছিলেন তিনি। তবে তার ইনিংসকে আর লম্বা করতে দেননি নানগেয়ালিয়া খারোটে।
এক ওভারে এসেই খারোটে তুলে নেন জোড়া উইকেট। প্রথমে বিদায় করেন সেট হওয়া শান্তকে। ৪১তম ওভারে খারোটেকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৭৬ রানে শেষ হয় বাংলাদেশ অধিনায়কের প্রতিরোধ। একই ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকেও নিজের শিকার বানান খারোটে।
দ্রুত উইকেট হারানোর পর শেষ দিকে জাকের আলি ও নাসুমের ব্যাট চড়ে আড়াইশ পার করে থামে বাংলাদেশ। জাকের ২৭ বলে করেন ৩৭ রান। ২৪ বলে ২৫ রান করেন নাসুম আহমেদ।
বল হাতে হাফগানিস্তানের হয়ে ৩২ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন রশিদ খান। ২৮ রান খরচায় খারোটের শিকার তিন উইকেট। গজনফারের শিকার দুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫২/৭ (তানজিদ ২২, সৌম্য ৩৫, শান্ত ৭৬, মিরাজ ২২, হৃদয় ১১, মাহমুদউল্লাহ ৩, জাকের ৩৭*, নাসুম ২৫, তাসকিন ২*; ফারুকি ৭-০-৬৯-০, গাজনফার ১০-০৩৫-২, নাবি ১০-০-৪৯-০, নাইব ২-০-১০-০, ওমারজাই ৩-০-২৩-০, রাশিদ ১০-০-৩২-২, খারোটে ৮-০-২৮-৩)।