মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে আফগানদের চ্যালেঞ্জ দিল বাংলাদেশ
দুদলের সামনে একই সমীকরণ। জিতলে সিরিজ জয়, হারলে হাতছাড়া—এমন ম্যাচে বাংলাদেশের ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার হতাশা পেছনে ফেলে দুজনই খেললেন হাত খুলে। দুই তারকার ব্যাটে চড়ে সিরিজ জয়ের মিশনে আফগানিস্তানকে ২৪৫ রানের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সিরিজের শুরুটা হয়েছিল চরম হতাশায়। সেখান থেকে দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি তাই হয়ে দাঁড়িয়েছে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে। এমন ম্যাচে আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৪৪ রান করেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৮ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৯৮ বলে তার ইনিংস সাজানো ছিল ৭ টি চার ও তিন ছক্কায়।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর না থাকায় দায়িত্ব নেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ টস করতে নেমেই জিতে নিলেন সেই ভাগ্য।
আগে ব্যাট করতে নেমে আগের দিন উড়ন্ত শুরু এনে দিয়েছিলেন তানজিদ তামিম। আজও তার কাছে তেমনটাই প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশের। ফজল হক ফারুকির করা প্রথম ওভারটা বেশ সাবধানে সামলান তিনি। সৌম্য সরকারকে নিয়ে ওপেনিংয়ে আশা দেখান। কিন্তু দুবার জীবন পেয়েও সেই আশা আর বেশিদূর স্থায়ী হলো না।
ইনিংসের নবম ওভারে আজমতউল্লা ওমরজাই এসে ভেঙে দেন ওপেনিং জুটি। ওমরজাইয়ের বল ট্যাম্পে টেনে নিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন সৌম্য। ২৩ বলে ২৪ রান করে ফিরে যান এই বাঁহাতি ওপেনার।
পরের ওভারে এসে প্রথম বলে তামিমকে মাঠছাড়া করেন মোম্মমদ নবি। আফগান তারকার বলে কাভার পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ২৯ রানে ফেরেন এই বাঁহাতি ওপেনার। ৫৩ রানে জোড়া ধাক্কা খেয়ে বাংলাদেশ যখন ধুঁকছিল তখন ওয়ানডাউনে নেমে বাংলাদেশের চাপ বাড়ান জাকের হাসান। দীর্ঘ দিন পর ফেরার ম্যাচে দুর্ভাগ্যজনক রান আউটে কাটা পড়লেন জাকির হাসান। এরপর মাঠে নেমে আরেকবার বাংলাদেশকে হতাশায় ডোবান তাওহিদ। পাঁচে ব্যাট করতে নেমে রশিদ খানের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি।
৭২ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ যখন ধুঁকছিল তখন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন। চাপ সামলে দুজনেই খেলেন সাবলীল। আগের চার ওয়ানডেতে ধারাবাহিক ব্যর্থ হওয়া মাহমুদউল্লাহ মিরাজের সঙ্গে জুটি জমিয়ে ফেলেন।
টানা চার ওয়ানডেতে মোটে ছয় রান করা মাহমুদউল্লাহ তৃতীয় ম্যাচে দেন সমালোচনার জবাব। চাপের মুখে খারোটের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৯তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ফিফটি ছুঁতে তার লাগে ৬৩ বল। মিরাজও এই সিরিজে রান পাচ্ছিলেন না। আগের দুটিতে রানের সুর বেধেও তালগোল পাকিয়েছেন। তবে আজ আর ভুল করেননি। মন্থর ইনিংস খেললেও উইকেটে মাহমুদউল্লার সঙ্গী হয়েছেন। ১০৬ বলে তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি।
দুজনের ১৪৫ রানের চমৎকার জুটি বাংলাদেশকে নিয়ে যায় শক্ত অবস্থানে। শেষ পর্যন্ত মিরাজকে ৬৬ রানে বিদায় করে এই জউটি ভাঙেন ওমরজাই। তবে, বিদায়ের আগে মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহর গড়ে দেওয়া এই জুটিই শারজায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। মিরাজের বিদায়ের পর রিয়াদের ব্যাটে চড়ে আফগানিস্তানকে ২৪৫ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের হয়ে বল হাতে ৩৭ রান দিনে চার উইকেট নেন ওমরজাই। এক উইকেট নেন মোহাম্মদ নবি। রশিদ খানের শিকার শিকারও সমান একটি।