বাংলাদেশিদের ইমোর ব্যবহার রেকর্ড ছুঁয়েছে
কোভিড-১৯ নামক বৈশ্বিক মহামারির আক্রমণে বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবী এক নতুন বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছে। যার ফলে মানুষের জীবন, কাজ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ইন্সট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ ইমো এই কঠিন সময়ে মানুষের মাঝে অনলাইনে যোগাযোগ, তথ্যের সহজলভ্যতা, বিনোদনসহ নানা ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
আজ রোববার ইমো তাদের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখান থেকে বোঝা যায়, কীভাবে বাংলাদেশি নেটিজেনরা পুরো বছরজুড়ে এই অ্যাপটি ব্যবহার করে প্রিয়জনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পেরেছে।
রিপোর্ট অনুসারে, ২০২০ সাল জুড়ে বাংলাদেশি ইমো ব্যবহারকারীরা প্রায় ৯৬৮০ কোটি মেসেজ এবং ২৬০০ কোটি অডিও ও ভিডিও কল করেছে, যেখানে ২০১৯ সালের তুলনায় ৮.২ শতাংশ মেসেজে এবং ৭.৮ শতাংশ অডিও ও ভিডিও কল বেড়েছে। ২০২০ সালে ইমোর মাধ্যমে প্রত্যেক বাংলাদেশি গড়ে প্রায় ৭৫৩ বার মেসেজ বা কল করেছে।
তার মধ্যে মোট মেসেজের ৩১ শতাংশ অর্থাৎ ৩০০০ কোটি মেসেজ এবং মোট কলের ৫৮ শতাংশ অর্থাৎ ১৫০০ কোটি কল ছিল আন্তর্জাতিক; যা বাংলাদেশে বসবাসকারীদের সঙ্গে দেশের বাইরে থাকা বিপুল পরিমাণ প্রবাসীদের যোগাযোগের ব্যাপারটি নির্দেশ করে। বাংলাদেশি ইমো ব্যবহারকারীদের আন্তর্জাতিক কল সর্বোচ্চ যেসব দেশে গিয়েছে তার মধ্যে পাঁচটি দেশ হলো সৌদি আরব, ওমান, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার।
বিগত সালের মে মাসে ইমো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় পাঁচটি বিশেষ হটলাইন নম্বর বাংলাদেশের তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরের জন্য বরাদ্দ করেছিল যাতে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা ওই নম্বরগুলিতে যোগাযোগ করতে পারে।
বাংলাদেশিদের মাঝে অনলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করার প্রবণতা অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এ বছর বেশি ছিল। এ বছরে প্রায় ১৩ কোটি গ্রুপ কল এবং ২০২০ সালে যাত্রা শুরু করা ইমোর ইন্টারেকশন ফিচার প্লেটুগেদারের মাধ্যমে ১২.৮ কোটি ভার্চুয়াল পার্টি রুম তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া সহজভাবে ব্যবহারযোগ্য এবং ইন্টারঅ্যাকটিভ মাধ্যম হওয়ার পাশাপাশি অনলাইন কমিউনিকেশনের জন্য ইমো আরো সহজলভ্য এবং স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার উপযোগী প্ল্যাটফর্ম তৈরি অব্যাহত রাখবে। বাজারের সেরা প্রযুক্তি এবং স্থানীয় কমিউনিকেশন প্রযুক্তি নিয়ে ইমো ইন্টারনেট স্বল্পতা সত্ত্বেও ডাটা সক্ষমতার মাধ্যমে ইউজারদের জন্য কলের সুবিধা বাস্তবায়িত করতে পেরেছে। বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের জন্য ২০২০ সালে ইমো ভিডিও ও অডিও কলে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন গিগাবাইট ডাটা বাঁচিয়েছে, যার মূল্য প্রায় ১৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ইমোর ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস হিউ বলেন, গত বছরের কঠিন সময়ে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ দেশে এবং দেশের বাইরের প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় মুহূর্তগুলো ইমোতে ভাগাভাগি করে নেওয়ায় আমরা গর্ববোধ করছি। তিনি আরো যোগ করেন, ২০২১ সালে আমরা নতুন কিছু প্রত্যাশা করি এবং ইমো বাংলাদেশে নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে স্থানীয় সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপদ প্রোডাক্ট ও সার্ভিস অব্যাহত রাখবে।
একনজরে বাংলাদেশিদের ইমো ব্যবহারের চিত্র
· ২০২০ সালে বাংলাদেশি ইমো ব্যবহারকারীরা ৯৬৮ কোটি মেসেজ এবং ২৬০ কোটি অডিও ও ভিডিও কল করেছে; যা ২০১৯-এর তুলনায় যথাক্রমে ৮.২ শতাংশ এবং ৭.৮ শতাংশ বেশি।
· বছরজুড়ে গড়ে প্রত্যেক বাংলাদেশি প্রায় ৭৫৩ বার ইমোর মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে।
· মোট মেসেজের ৩১ শতাংশ এবং মোট কলের ৫৮ শতাংশ আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ছিল; সৌদি আরব, ওমান, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতারে বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ কল গিয়েছে।
· বাজারের সেরা প্রযুক্তি এবং স্থানীয় কমিউনিকেশন প্রযুক্তির সমন্বয়ে ২০২০ সাল জুড়ে ইমো বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের ১৫০ মিলিয়ন গিগাবাইটের বেশি ডাটা ভিডিও ও অডিও কলে বাঁচিয়েছে।
ইমো সম্পর্কে
ইমো একটি বিশ্বব্যাপী ইন্সট্যান্ট যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে অন্য প্রান্তের মানুষ অডিও কল, ভিডিও কল, গেমস বা মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি সুবিধার মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে খুব সহজেই যোগাযোগ করতে পারে। ইমোর উন্নত যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৫০টিরও বেশি দেশে ৬২ ভাষায় ২০ কোটিরও বেশি মানুষ তাদের বন্ধু, পরিবার বা বিভিন্ন কমিউনিটিতে সফলভাবে যোগাযোগের পাশাপাশি জীবনের নানা আয়োজন ভাগাভাগি করে নিতে পারছে।