পৃথিবীর মতোই গ্রহ আবিষ্কৃত

পৃথিবীর সঙ্গে অনেকটাই মিল আছে, এমন একটি গ্রহ পাওয়া গেছে। পৃথিবী থেকে প্রায় দেড় হাজার আলোকবর্ষ দূরে থাকা গ্রহটি ঘুরছে সূর্যের মতোই একটি নক্ষত্রকে ঘিরে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা বৃহস্পতিবার এ গ্রহের কথা জানান। এই আবিষ্কারের ফলে পৃথিবীর বাইরে জীবনের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা আরো বাড়ল বলে মনে করেন গবেষকরা।
কেপলার মহাকাশ টেলিস্কোপের মাধ্যমে পৃথিবীর মতো গ্রহটি খুঁজে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘কেপলার-৪৫২বি’। গ্রহটি পাওয়া গেছে মিল্কিওয়ের সাইগনাস নক্ষত্রপুঞ্জে। পৃথিবীর চেয়ে ৬০ শতাংশ বড় গ্রহটি যে নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, তা সূর্যের মতো আকৃতি ও তাপমাত্রার হলেও বেশি বয়সী। গ্রহটি সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা নিবন্ধ বিজ্ঞান সাময়িকী ‘দি অ্যাস্ট্রনমিক্যাল জার্নাল’-এ শিগগিরই হবে।
বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার আমেস রিসার্চ সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষক জন জারকিনস বলেন, ‘কেপলার-৪৫২বি’ সূর্যের মতো যে নক্ষত্রটি ঘিরে ঘুরছে, তার বয়স ৬০০ কোটি বছর। আর সূর্যের বয়স ধরা হয় ৪৬০ কোটি বছর। জীবন থাকতে এমন স্থানে গ্রহটি ৬০০ কোটি বছর ধরে আছে। অনুকূল অবস্থানে কোনো গ্রহে জীবনের শুরু হওয়ার জন্য এটি যথেষ্ট সময়।
নাসার গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবী ও সূর্যের মতোই ‘কেপলার-৪৫২বি’ বেশ দূরত্ব রেখে নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। সূর্যকে ঘুরে আসতে পৃথিবী সময় নেয় ৩৬৫ দিন। সেখানে ‘কেপলার-৪৫২বি’-এর নক্ষত্রকে ঘুরে আসতে সময় নেয় ৩৮৫ দিন। গবেষকরা ধারণা করেন, গ্রহটির পৃষ্ঠের তাপমাত্রা পানি তরল থাকার উপযোগী হতে পারে। এর আগেও পৃথিবীর মতো আকৃতির গ্রহ পেয়েছিলেন গবেষকরা। তবে পৃথিবীর সঙ্গে কোনোটিরই এতটা সাদৃশ্য পাওয়া যায়নি।
২০০৯ সালে নাসা কেপলার মহাকাশ টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণ করে। এর লক্ষ্য ছিল নিকটবর্তী গ্রহগুলো নিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও পৃথিবীর মতোই মানুষের বাসযোগ্য গ্রহ খুঁজে বের করা।
নাসার গবেষক জেফ কাউলিন বলেন, সূর্যের মতোই কোনো নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে এবং তাপমাত্রা পৃথিবীর প্রায় সমান এমন গ্রহের সন্ধানে চলা গবেষণায় মাইলফলক ‘কেপলার-৪৫২বি’ খুঁজে পাওয়া। গবেষকরা মনে করেন, পৃথিবীর মতোই ‘কেপলার-৪৫২বি’ গ্রহটি হবে পাথুরে মাটির। তবে এটি কেপলারের পাঠানো তথ্য কম্পিউটারে বিশ্লেষণ করে পাওয়া সম্ভাব্যতা। যদি এটি সত্যি হয়, তাহলে গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে পাঁচ গুণ বড় হবে এবং অভিকর্ষজ ত্বরণ হবে পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুণ। একই সঙ্গে গ্রহটির চারপাশে ভারী জলবায়ু, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থাকতে পারে। এ ছাড়া গ্রহটির পৃষ্ঠে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিও থাকতে পারে।