‘খুনি রোবট’ নিয়ে কাজ না করার আহ্বান বিজ্ঞানীদের

খুনি রোবট তৈরির প্রযুক্তি নিয়ে কাজ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের নামকরা বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী। এঁদের মধ্যে রয়েছেন স্টিফেন হকিং, এলোন মাস্ক, নোয়াম চমস্কি, এ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াকসহ এক হাজারেরও বেশি প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানী।
‘ফিউচার অব লাইফ ইনস্টিটিউট’ নামক একটি সংগঠনের ব্যানারে লেখা এক খোলাচিঠিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে সমরাস্ত্রের গবেষণা বন্ধের আহ্বান জানান বিজ্ঞানীরা। এ খবরটি গুরুত্ব দিয়ে ছাপিয়েছে সিএনএন মানি, দ্য হাফিংটন পোস্ট এবং দি ইনডিপেনডেন্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি ‘কিলার রোবট’ নামেও পরিচিত। এসব বিজ্ঞানীদের দাবি এ ধরনের প্রযুক্তি আগামী দিনগুলোতে মানুষের অস্তিত্বের ওপর হুমকি হিসেবে কাজ করবে। তাঁদের শঙ্কা, এখনই এই প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা বন্ধ করা না হলে সামনের দিনগুলোতে পৃথিবীতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সামরিক প্রযুক্তি নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাবে যা কারো জন্যই শুভ হবে না।
উন্নত দেশগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে যেগুলো স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট মানুষকে খুঁজে বের করে হত্যা করতে পারবে। দূরনিয়ন্ত্রিত এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়বে, সাধারণ মানুষের জীবনের হুমকি ততই বাড়বে।
চিঠিতে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন, গান পাউডার এবং পারমাণবিক প্রযুক্তির পর এ ধরনের প্রযুক্তিকে মারণাস্ত্রের ক্ষেত্রে ‘তৃতীয় বিপ্লব’ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে আশাবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানবজাতির কল্যাণে ব্যবহার করার অনেক উপায় রয়েছে। কিন্তু রোবটিক অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের দমন করা সম্ভব হলেও এসব অস্ত্রের সাহায্যে গণহত্যা চালানোও সম্ভব। কোনো সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এ ধরনের প্রযুক্তি হাতে পেলে যে কোনো ধরনের বড় ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে তারা।
এ ধরনের প্রযুক্তি এখনো বাস্তবে না থাকলেও যেভাবে এসব অস্ত্র নিয়ে গবেষণা চলছে তাতে অচিরেই এ ধরনের অস্ত্র আবিষ্কার হয়ে যাওয়া অসম্ভব নয় বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এ ধরনের সামরিক প্রযুক্তির প্রসার উন্নত দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা।
গত বছর দক্ষিণ কোরিয়া অস্ত্রসজ্জিত রোবট প্রযুক্তির ঘোষণা দেয়। এসব রোবট এখন উত্তর কোরিয়ার সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে। এসব রোবট ক্যামেরা এবং হিট সেন্সরের মাধ্যমে মানুষকে শনাক্ত করতে পারে তবে মানুষ হত্যার জন্য একজন মানব অপারেটরের সাহায্য প্রয়োজন এসব রোবটের।