অনলাইনে ‘গোল্ডেন রেকর্ড’

মনে আছে, ভয়েজার মহাকাশযানের কথা। ১৯৭৭ সালে মহাকাশে ভিনগ্রহবাসীর জন্য পাঠানো পৃথিবীবাসীর দূত ‘ভয়েজার ওয়ান’। মহাকাশযানটি সৌরজগৎ পার হয়ে এখনো চলছে অজানার পথে। মহাকাশযানটির পিঠে লাগানো আছে ‘গোল্ডেন রেকর্ড’, যেখানে প্লেটে সংরক্ষণ করা হয়েছে পৃথিবীর প্রকৃতি ও পরিবেশের কিছু শব্দ, তথ্য ও ছবি। গোল্ডেন রেকর্ডে পাঠানো পৃথিবীর শব্দগুলোর উন্নত সংস্করণ এখন যে কেউ শুনতে পারবে। অনলাইনে গান শোনার ওয়েবসাইট সাউন্ডক্লাউডে এটি ছেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গোল্ডেন রেকর্ডের জন্য পৃথিবীর শব্দ বাছাই করতে একটি কমিটি গঠন করেছিল নাসা। এর প্রধান হন তৎকালীন কর্নেল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, মহাকাশবিজ্ঞানী ও প্রখ্যাত লেখক কার্ল স্যাগান। গোল্ডেন রেকর্ডের কমিটি পৃথিবীর ১১৫টি ছবি ও কিছু শব্দ বাছাই করে। এর মধ্যে ছিল সমুদ্রের গর্জন, বাতাস বয়ে যাওয়া, বৃষ্টি, বজ্রপাতসহ নানা প্রাকৃতিক অবস্থার শব্দ। এ ছাড়া ছিল পাখি, তিমিসহ অনেক প্রাণীর শব্দ। আরো সংরক্ষণ করা হয় বিভিন্ন সময়কার সংস্কৃতির সংগীত। গোল্ডেন রেকর্ডে যুক্ত করা হয় ৫৫টি ভাষায় শুভেচ্ছা। এ ছাড়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কার্টার ও জাতিসংঘের মহাসচিব ওয়াল্ডহেমের লিখিত বাণী।
গোল্ডেন রেকর্ডে শুভেচ্ছা জানানোর ৫৫টি ভাষার ১০টি এই উপমহাদেশের। এগুলো হলো—বাংলা, হিন্দি, গুজরাটি, মারাঠি, ওড়িয়া, পাঞ্চাবি, রাজস্থানি, তেলেগু, উর্দু ও কান্নাদা।
কার্ল স্যাগান বলেন, কোনো বুদ্ধিমান ভিনগ্রহের প্রাণী মহাকাশযানটি খুঁজে পেলে গোল্ডেন রেকর্ড বাজিয়ে তারা পৃথিবী সম্পর্কে জানতে পারবে।
ভয়েজারে রাখা নাসার গোল্ডেন রেকর্ডের লক্ষ্য হলো ভিনগ্রহবাসীর কাছে পৃথিবীকে পরিচিত করা। কার্ল স্যাগানের ভাষায়, পৃথিবী হলো পেল ব্লু ডট।
গোল্ডেন রেকর্ডের শব্দগুলো অনেক আগে থেকেই অনলাইনে ছিল। তবে এগুলো ছিল খুবই নিম্নমানের। তবে সাউন্ড ক্লাউডে উন্নতমানের শব্দের গোল্ডেন রেকর্ড রেখেছে নাসা।
গান বিনিময়ের অন্যতম ওয়েবসাইট সাউন্ড ক্লাউডে যে কেউ কোনো গান বা শব্দ সংরক্ষণ ও অন্যের সঙ্গে বিনিময় করতে পারে। সাউন্ড ক্লাউডে গোল্ডেন রেকর্ড শুনতে চাইলে ক্লিক করুন।