মলমূত্র দিয়ে খাবার তৈরি করবে নাসা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/08/24/photo-1440408335.jpg)
উদ্ভাবনের জন্য নাসার তুলনা হয় না। নিত্যনতুন এবং অকল্পনীয় সব বিষয় নিয়ে গবেষণা করে আসছে তারা। মার্কিন এই মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকেই আগামীর দুনিয়ার পরিকল্পনা তৈরি হয়। এবার নতুন একটি মজার বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে নাসা, যেটা শুনলে প্রথমে বিশ্বাসই হবে না আপনার।
মানুষের মলমূত্র দিয়ে কীভাবে মানুষেরই খাবার তৈরি করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা করার জন্য একদল গবেষককে দায়িত্ব দিয়েছে নাসা। তবে এর পেছনে একটি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। গবেষণার জন্য মহাকাশে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয় নভোচারীদের। সে সময় তাদের দীর্ঘদিনের খাবার একবারে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু মাঝেমধ্যে বেশি সময় লেগে গেলে খাবারের সংকট প্রকট হয়ে ওঠে। নভোচারীদের জন্য বিকল্প খাবারের ব্যবস্থা করার জন্যই এ গবেষণা। এ খবর জানিয়েছে ইন্দো এশিয়ান নিউজ সার্ভিস।
যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনার ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষককে এ জন্য দুই লাখ ডলার অনুদান দিয়েছে নাসা। নাসার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ গবেষণার জন্য তিন বছর সময় পাবেন গবেষকরা। মানুষের মূত্র এবং দেহ থেকে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইডকে কীভাবে খাবারে পরিণত করা যায়, প্রাথমিক পর্যায়ে তা নিয়ে কাজ করবেন গবেষকরা।
নাসার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আটটি বিশ্ববিদ্যালয় এই গবেষণার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তাদের মধ্য থেকে ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়কে এ গবেষণার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
নাসার স্পেস টেকনোলজি মিশন ডিরেক্টরেটের অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর স্টিভ জুরসজিক বলেন, ‘নাসার নভোচারীদের জন্য বিকল্প খাবার তৈরির বিষয়ে প্রাথমিক গবেষণার কাজ সম্পন্ন করবেন এসব বিজ্ঞানী।’
ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্ক ব্লেনার বলেন, ‘ইস্টের কিছু প্রজাতি রয়েছে, যেগুলো থ্রিডি প্রিন্টিংয়ে ব্যবহৃত পলিমার ও প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং মানুষের ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় কার্যকর। ইস্ট উৎপাদনে নাইট্রোজনের প্রয়োজন হয় আর মানুষের মূত্র থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করা সম্ভব।’
পাউরুটি তৈরিতে এই ইস্ট ব্যবহার করা হয়। ক্লেমসনের গবেষকরা ইস্ট দিয়ে খাদ্যোপযোগী প্লাস্টিক তৈরির কথা ভাবছেন।
এ মাসের শুরুতে নাসার ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে থাকা ছয় নভোচারী প্রথম মানব হিসেবে মহাকাশে নাসার ল্যাবে উৎপন্ন সবজি খেয়ে দিনযাপন করছেন। ধীরে ধীরে মহাকাশেই খাবার উৎপন্ন করায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চাইছে নাসা, যাতে দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশে গবেষণা চালাতে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়। এসব ল্যাবে সবজি এবং অক্সিজেন উৎপাদনের পাশাপাশি মলমূত্র থেকেও কীভাবে খাবার তৈরি করা হয়, তা নিয়ে গবেষণা চলছে।
এতে মহাকাশে নভোচারীদের ব্যবহৃত কোনো কিছুই নষ্ট হবে না; বরং তা রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে আবার ব্যবহার করা যাবে।
এত কষ্টের একটাই উদ্দেশ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গলগ্রহে মানব সন্তান পাঠাতে চায় নাসা।