হাসিমুখ মানেই সুখী মানুষ নয়!

সাধারণত মানুষ বিশ্বাস করে, যারা অনেক লোকের সঙ্গে মিশতে পারে বা তাদের সঙ্গে হাসিখুশি থাকে, তারাই সুখী মানুষ। তবে নতুন এক গবেষণা বলছে, হাসিখুশি থাকা মানুষগুলোকে সুখী ভাবা ভুল। হাসি সুখে থাকার ইঙ্গিত দেয় না।
যুক্তরাজ্যের ব্রাইটন অ্যান্ড সাসেক্স মেডিকেল স্কুলের (বিএসএমএস) এক গবেষণায় এর প্রমাণ মিলেছে। গবেষণা পরিচালনা করেন শরীরভাষা বিশেষজ্ঞ ড. হ্যারি উইচেল।
উইচেল এটাকে সামাজিক আচরণ মনে করেন। তিনি ১৮ থেকে ৩৫ বছরের ৪৪ জন অংশগ্রহণকারী নিয়ে জিওগ্রাফি কুইজ গেম প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। সেখানে নয়টি কঠিন প্রশ্ন ছিল, যার উত্তর তাঁরা ভুল দিয়েছেন।
অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে আলাদা কক্ষে একটি করে কম্পিউটার দিয়ে একা রাখা হয় এবং তাদের মুখভঙ্গির ভিডিও রেকর্ড করা হয়। এই নিরীক্ষাকে গবেষকদল হিউম্যান-কম্পিউটার ইন্টারর্যাকশন (এইচসিআই) বা মানুষ-কম্পিউটার মিথষ্ক্রিয়া বলছেন।
কুইজ শেষে অংশগ্রহণকারীদের নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতার মাত্রা জিজ্ঞেস করা হয়, যেখানে ১২টি আবেগ চিহ্ন ব্যবহার করা হয়— যেমন ‘বিরক্ত’, ‘কৌতূহলী’, ‘হতাশ’ ইত্যাদি।
ভিডিওতে ধারণ করা মুখমণ্ডলের অভিপ্রায়গুলো কম্পিউটারে বিশ্লেষণ করা হয়। উইচেল বলেন, প্রকৃত হাসি হলো ভেতরের প্রফুল্লতা ও পরিতৃপ্তির প্রতিফলন। মানুষ-কম্পিউটার মিথষ্ক্রিয়ার নিরীক্ষা বলছে, সুখ হাসির ভঙ্গি দ্বারা চালিত নয়। এটা সামাজিক। এমনকি কম্পিটারের সামনেও সেই সামাজিকীকরণ থাকে।
যা হোক, অংশগ্রহণকারীরা তখনই ঠিকভাবে হেসেছেন, যখন কম্পিউটার তাদের বলেছে, উত্তর সঠিক বা বেঠিক। মজার ব্যাপার হলো, যখন তাঁদের উত্তর বেঠিক হয়েছে, তখনই তাঁরা বেশি হেসেছেন। অ্যাসোসিয়েশন অব কম্পিউটিং মেশিনারির (এসিএম) সাময়িকীতে এ গবেষণা-নিবন্ধটি প্রকাশ করা হয়েছে।