নাসার দাবি, মঙ্গলে আছে পানি

লাল মাটির গ্রহ মঙ্গলে জমাট এবং তরল লবণাক্ত পানির সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আজ সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৪৪ মিনিটে নাসা এ ঘোষণা দেয়।
এর আগে অনেকদিন ধরেই মঙ্গলগ্রহে পানির অস্তিত্ব পাওয়ার দাবি করে আসছিল সংস্থাটি। যাকে তারা বলেছিল, জমাটবদ্ধ বরফের সাগর। সেই ধারণায় বড় ধরনের পরিবর্তন এলো এবার। সর্বশেষ অনুসন্ধান অনুযায়ী, বরফের সাগর নয়, বরং এই গ্রহে পানির প্রবাহ আছে।
সোমবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় ওয়াশিংটনে নাসার সদর দপ্তরের জেমস ওয়েব অডিটোরিয়ামে ‘মঙ্গল রহস্যের সমাধান’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনে ‘বিজ্ঞানের বিশাল আবিষ্কার’ সম্পর্কে জানান বিশ্ববাসীকে।
নাসা দাবি করেছে, মঙ্গলের মার্সিয়ান বায়ুস্তরে পানির সন্ধান পাওয়া গেছে। এ পানি কোথা থেকে আসছে, তা এখনো নিশ্চিত নয় বিজ্ঞানীরা। তবে তাঁদের ধারণা, মঙ্গলগ্রহের ভূপৃষ্ঠের নিচের কোনো পানির উৎস থেকে লবণাক্ত এ পানি এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন নাসার চার বিজ্ঞানী। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন নাসার সদর দপ্তরের গ্রহবিষয়ক পরিচালক জিম গ্রিন। এ ছাড়া মঙ্গল গ্রহে প্রবাহিত পানির সন্ধান পাওয়ার প্রথম দাবিদার ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ও জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষক লুজেন্দ্র ওঁঝা এ পানি পাওয়ার বিষয়ে কথা বলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন মঙ্গলগ্রহে অনুসন্ধান কার্যক্রমের প্রধান বিজ্ঞানী মাইকেল মেয়ের।
ফ্রান্স থেকে টেলিফোন বক্তব্যে লুজেন্দ্র ওঁঝা জানান, মঙ্গলে গভীর অন্ধকার খাদ রয়েছে। যখন শরৎকাল চলে, তখন জমে থাকা বরফ তরল পানিতে পরিণত হয়। তবে সারা বছর মঙ্গলে গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি।
এর আগে নাসা আরো দাবি করেছিল, একসময় মঙ্গলের এক-পঞ্চমাংশ অঞ্চল পানিতে ঢাকা ছিল। যা থেকে তারা দাবি করে, যেহেতু পানির অস্তিত্ব ছিল সেখানে, সেহেতু প্রাণের অস্তিত্বও ছিল এবং হয়তো এখনো আছে বা ভবিষ্যতে থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে মঙ্গলগ্রহে পাড়ি দিতে যাচ্ছেন একদল উৎসুক মানুষ। তাঁরা শুধু যেতে পারবেন কিন্তু ফিরতে পারবেন না। সেখানে তারা আদৌ বেঁচে থাকতে পারবেন কি না, তাও নিশ্চিত নয়।
এমন অবস্থায় নাসা মঙ্গলে প্রবাহিত পানির সন্ধান পাওয়ার যে দাবি করছে, তাতে মঙ্গল অভিযাত্রীদের আগ্রহ হয়তো আরো বেড়ে যাবে।