ফিরে আসছে চেরনোবিলের জীববৈচিত্র্য

চেরনোবিলের সেই ভয়ংকর বিপর্যয়ের কথা মনে আছে? প্রায় ৩০ বছর আগে ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেন অঙ্গরাজ্যে ঘটে শতাব্দীর এই ভয়াবহতম পরমাণু বিপর্যয়। বিরানভূমিতে পরিণত হয় প্রায় পাঁচ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চল।
বিজ্ঞানীরা ধরেই নিয়েছিলেন, প্রাণহীন হয়ে পড়ে থাকাই ওই অঞ্চলের নিয়তি। কিন্তু প্রকৃতি যেন তার বিস্ময়কর কীর্তি দেখানোর জন্য এই অঞ্চলটিকেই বেছে নিয়েছে। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, চেরনোবিলের ওই অঞ্চল জীববৈচিত্র্যে রীতিমতো ভরপুর হয়ে উঠেছে। আর এ খবর পাওয়া গেছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ওয়েবসাইট নিউজ ডটকম থেকে।
প্রায় চার হাজার ২০০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চলে পরিচালিত জরিপে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, চেরনোবিলে এল্ক হরিণ, লাল হরিণ আর বন্য শূকরের সংখ্যা অন্যান্য প্রাকৃতিক অভয়ারণ্যের মতোই। আর নেকড়ে আছে অন্যান্য অভয়ারণ্যের তুলনায় সাত গুণ বেশি।
বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, ‘৩০ বছর ধরে ভয়াবহ তেজস্ক্রিয়তার সম্মুখীন থেকেও বন্য পশুদের এই রমরমা অবস্থা রীতিমতো অবিশ্বাস্য।’
হেলিকপ্টার থেকে আর হেঁটে পরিচালিত ওই জরিপ অনুযায়ী চেরনোবিল এখনো মানুষের বসবাসের উপযোগী নয়, তবে বন্য প্রাণীরা এ অবস্থায়ও দিব্যি রয়েছে, যা ছিল বিজ্ঞানীদের অনুমানের বাইরে।
গবেষক মাইক উড আর নিক বেরেসফোর্ড অবশ্য আরো যাচাই-বাছাই করতে চাইছেন। তাঁদের মতে, ‘চেরনোবিলের জীববৈচিত্র্যকে পর্যবেক্ষণ করলে জীবকোষের ওপর তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব সম্বন্ধে অনেক কিছু জানা যাবে, যা জাপানের ফুকুশিমা বিপর্যয় বা ভবিষ্যতের অন্য কোনো পরমাণু বিপর্যয় সামাল দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল আর ২০১১-এর ফুকুশিমা বিপর্যয় এ পর্যন্ত ঘটা সবচেয়ে ভয়াবহ পরমাণু দুর্ঘটনা। উভয় ঘটনায় সব মিলিয়ে প্রায় সাত লাখ মানুষকে বাস্তুহারা হতে হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছে আরো শতাধিক মানুষ।