ধূমকেতু মদ!

মহাকাশ অভিযানে মদ খাওয়া নিষিদ্ধ। তবে মহাকাশে মদের কিন্তু কোনো কমতি নেই। মদের অন্যতম রাসায়নিক উপাদান হলো ‘ইথাইল অ্যালকোহল’। এই প্রথম মহাকাশে কোনো ধূমকেতুর কথা জানা গেল, যা থেকে প্রতিনিয়ত এই উপাদান বের হচ্ছে। আর ওই ধূমকেতু থেকে মহাশূন্যে অ্যালকোহল ছড়িয়ে পড়ার সর্বোচ্চ মাত্রা প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ বোতল! ফ্রান্সের গবেষকরা সম্প্রতি এমন ধূমকেতুর কথা জানিয়েছেন।
সায়েন্স ডেইলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোনো ধূমকেতু থেকে অ্যালকোহল নিঃসৃত হওয়া মানে হলো সেখান থেকে জটিল জৈব পদার্থ পাওয়ার সম্ভাবনাও আছে। তাই এমন আবিষ্কারের ঘটনা মহাকাশে জীবনের অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণায় বেশ গুরুত্ব বহন করে।
ইথাইল অ্যালকোহল তৈরি করা ধূমকেতুটির নাম সি/২০১৪ কিউ২। তবে এর একটি সুন্দর নামও আছে, ‘লাভজয়’। ২০১৪ সালের ১৭ আগস্ট ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেন অস্ট্রেলিয়ার জ্যোতির্বিদ ও গবেষক টেরি লাভজয়। তাঁর আবিষ্কৃত কয়েকটি ধূমকেতুই লাভজয় নামেই পরিচিত। তবে লাভজয়ের অ্যালকোহল নিঃসরণের বিষয়টি আবিষ্কার হয়েছে সম্প্রতি।
সম্প্রতি লাভজয় ধূমকেতু থেকে ইথাইল অ্যালকোহন নিঃসরণের বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন ফ্রান্সের বিখ্যাত স্থাপনা প্যারিস অবজারভেটরির গবেষক নিকোলাস বিভার। এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স অ্যাডভান্সেস।
গবেষকরা বলেন, ধূমকেতু ‘লাভজয়’ থেকে নিঃসৃত গ্যাসে ২১ ধরনের জৈব পদার্থের অণু পাওয়া যায়, যার মধ্যে আছে ইথাইল অ্যালকোহল এবং গ্লাইকোলালডিহাইড নামক চিনি।
গবেষকদের মতে, ধূমকেতু হলো সৌরজগৎ সৃষ্টির সময়কার হিমায়িত অবশিষ্টাংশ। মহাকাশে জীবনের অস্তিত্ব খোঁজার ও জ্যোতির্বিদ্যায় এগুলো বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ধূমকেতু নিয়ে গবেষণাতেই সৌরজগৎ সৃষ্টির ইতিহাস মিলবে বলে মনে করেন গবেষকরা।