গণিতভীতিই গণিতে ভালো করার মূলমন্ত্র!

আপনি গণিতকে ভয় পান? পেলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই! বরং জেনে রাখুন, যেকোনো গাণিতিক সমস্যা সমাধানে আপনি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন!
একটু অদ্ভুত শোনালেও নতুন এক গবেষণা বলছে, গণিতের সমস্যা সমাধানের সময় কিছুটা ভীতি থাকলে আসলে গণিতের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, একটি মাত্রা পর্যন্ত গণিতভীতি এই শাখায় আরো পারদর্শী হতে সাহায্য করে। অন্যদিকে যারা গণিত বিষয়ে উৎসাহী থাকেন এবং যাদের ভেতরে গণিত নিয়ে তেমন কোনো ভয় কাজ করে না, তারাই গণিতের সমস্যা সমাধানের চ্যালেঞ্জে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট অ্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক ঝে ওয়াং বলেন, ‘আমাদের গবেষণা বলছে গণিত নিয়ে ভীতি ও গণিত শেখার এই পরস্পরবিরোধী সম্পর্ক সর্বজনীন নয়। তবে এমনটা সত্যিই ঘটছে।’
কিছু শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে গণিত বিষয়টি নিয়ে তারা খুব ভয়ের মধ্যে থাকে এবং গণিতের সমস্যা সমাধান করা তাদের জন্য সত্যিই খুব কঠিন কাজ। আবার কিছু শিশুর গণিত নিয়ে ভীত থাকে কারণ তারা এ বিষয়টাতে ভালো করতে চায়।
গবেষকরা বলছেন, এই দুই দল শিশুর মধ্যে গণিত শেখা ও গণিতের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে দুই ধরনের আচরণ দেখা যেতে পারে।
সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার জন্য ২৬২ জোড়া সমলিঙ্গের জমজ শিশুকে বেছে নেওয়া হয়। যাদের বয়স গড়ে ১২ বছর। এদের মধ্যে গণিত ভীতিসম্পন্ন শিশু যেমন আছে তেমনি গণিতে ভয় পায় না এমন শিশুও রয়েছে। এদের গণিতের ছয়টি সমস্যার সমাধান করতে দেওয়া হয়।
ফলাফলে দেখা যায় যে, গণিত নিয়ে ভয় পাওয়া বা না পাওয়ার সঙ্গে বয়সের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে দেখা যায় যে, মেয়ে শিশুদের মধ্যে ছেলে শিশুদের চাইতে গণিত ভীতি বেশি কাজ করে।
যখন গবেষকরা গণিত ভীতি ও গণিত ভয় না পাওয়া দুই ধরনের প্রতিক্রিয়াকে একসাথে দেখলেন, তখন ফলাফলটি হলো বেশ জটিল। দেখা গেল, যাদের ভেতরে গণিত নিয়ে ভীতি ছিল তারাই ভালো সমাধান করতে পেরেছে। আর যারা গণিত বিষয়ে বেশ উৎসাহী ছিল তাদের ফলাফল ছিল হতাশাব্যঞ্জক।
অর্থাৎ, যদি আপনার মধ্যে গণিত নিয়ে ভীতি থাকে তাহলে মনে করে নিতে পারেন যে, অন্য অনেকের চেয়ে গণিতবিষয়ক সমস্যার সমাধান আপনি ভালোই করবেন। এ ক্ষেত্রে এটা বলা যেতেই পারে যে, সব ভয় খারাপ নয়।