বর্ণবাদীদের পরিচয় ফাঁস করল হ্যাকার গ্রুপ

পাশ্চাত্যে বর্ণবাদ সমস্যাটি নতুন নয়। এবার বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে মাঠে নামল এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী পরিচয় লাভ করা হ্যাকার গ্রুপ ‘অ্যানোনিমাস’। গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত বর্ণবাদী সংগঠন ‘ক্লু ক্লুক্স ক্ল্যান’-এর হাজারখানেক সদস্যের পরিচয় ফাঁস করে দিয়ে এক নতুন সাইবার যুদ্ধ শুরু করল তারা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘ওয়্যার্ড’ জানিয়েছে এ খবর।
পেস্টবিনে অ্যানোনিমাস সদস্যরা ক্ল্যান সদস্যদের ফেসবুক আর গুগল প্লাস পেজের লিংক প্রকাশ করে শুরু করেছে তাদের এই নতুন অভিযান। অ্যানোনিমাসের দাবি, এক বছর ধরে ডিজিটাল এস্পায়োনেজের মাধ্যমে তারা এসব সদস্যের তালিকা প্রস্তুত করেছে।
অনেক সদস্যের প্রোফাইলেই বর্ণবাদী ছবি অথবা স্লোগান দেখা যায়। ক্লু ক্লুক্স ক্ল্যান ছাড়াও ওই জাতীয় বর্ণবাদী সংগঠনের সদস্যের প্রোফাইলও এ তালিকায় আছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ নিতান্তই সাধারণ মানুষ, কেউ কেউ আবার ভয়াবহ ধরনের বিপজ্জনক—এমনটাই দাবি অ্যানোনিমাসের।
অবশ্য অনলাইন পর্যবেক্ষকরা বিশেষ খুশি নন এই তালিকায়। মার্ক পিটক্যাভেজ নামের একজন পর্যবেক্ষক বলেন, ‘তালিকায় যাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তারা অনেকেই অতীতে ক্ল্যানের সদস্য ছিলেন, এটা স্বীকৃত সত্য। নতুন করে এ তালিকা প্রকাশে বিশেষ কোনো লাভ হয়নি। এ ছাড়া অনেকেরই নামের বানান ভুল এসেছে।’
এ ছাড়া বেশ কিছু মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের নামও এ তালিকায় উপস্থিত আছে, যদিও কংগ্রেস সদস্যরা ক্ল্যানের সঙ্গে তাদের সংযোগ অস্বীকার করেছেন।
অ্যানোনিমাস দাবি করছে, এটা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তাদের এক ধরনের যুদ্ধ। গ্রুপটির ভাষ্যমতে, ‘আমরা জানি, আমরা যা করছি তা অত্যন্ত বিতর্কিত এবং সংবেদনশীল। এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে কিছু ভুলও ধরা পড়েছে। আমরা আমাদের তালিকা সংশোধন করছি, তবে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’
গত বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যে মাইকেল ব্রাউন নামের এক নিরপরাধ কৃষ্ণাঙ্গ কিশোরকে গুলি করে মারার পরও ছাড়া পেয়ে যায় অভিযুক্ত শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার। তার পর থেকেই বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা নতুন জোয়ার পেয়েছে।
ক্লু ক্লুক্স ক্ল্যান মার্কিন গৃহযুদ্ধের পর গঠিত একটি বর্ণবাদী সংগঠন। নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে এসে বর্তমানে আনুমানিক পাঁচ থেকে আট হাজার ব্যক্তি এর সদস্য। সংগঠনটি শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্যে বিশ্বাস করে এবং বোমা হামলা, খুনসহ নানা অভিযোগ আছে এর বিরুদ্ধে।