ক্যানসার শনাক্ত করবে কবুতর?

চিঠি আদান প্রদান থেকে শুরু করে সার্কাসের খেলা দেখানো, কবুতরের অনেক ব্যবহারই প্রচলিত আছে প্রাচীনকাল থেকে। এবার বিজ্ঞানীরা ঘোষণা দিলেন কবুতরের মাধ্যমে তাঁরা মানবদেহে ক্যানসার শনাক্ত করবেন। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন কবুতর মানবদেহে ক্যানসার কোষ শনাক্ত করার ক্ষমতা রাখে। অদূর ভবিষ্যতে ক্যানসার নির্ণয় অথবা ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে ডাক্তারদের দারুণ সাহায্য করবে এই আবিষ্কার, এমনটাই আশা করছেন গবেষকরা।
আটটি কবুতর নিয়ে এই গবেষণা চালানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা প্রতিটি কবুতরকে একটি ক্যানসার আক্রান্ত কোষের ছবি, আর একটি সুস্থ কোষের ছবি দেখিয়েছেন। তাদের এভাবে শেখানো হয়েছে যেন তারা ক্যানসার আক্রান্ত কোষ দেখলে ওই ছবিতে ঠোকর দেয়।
এভাবে টানা ১৫ দিন প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর দেখা গেছে শতকরা ৮৫ ভাগ ক্ষেত্রে কবুতরগুলো ক্যানসার কোষ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে মজার ব্যাপার হলো, যখন দলবদ্ধভাবে ক্যানসার কোষ শনাক্ত করতে দেওয়া হয়েছে তখন তারা প্রায় নিখুঁতভাবে তাদের কর্ম সমাধা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিচার্ড লেভেন্সন আর লোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এড ওয়াসারম্যান অবশ্য বেশ উৎফুল্ল এই গবেষণার ফলাফল নিয়ে। যদিও কবুতররা প্রাণঘাতী ক্যানসার কোষ আর প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যানসার কোষের পার্থক্য নির্ণয়ে বিশেষ সফল হয়নি।
তবে গবেষণা চালানো বিজ্ঞানীরা কবুতরদের এ ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন। লেভেন্সনের ভাষায়, ‘একজন রেডিওলোজিস্ট চার বছর ধরে ক্রমাগত ক্যানসার কোষ দেখে অভ্যস্ত হওয়ার পরই কেবল কোনটি প্রাণঘাতী আর কোনটি প্রাথমিক পর্যায়ের তা নির্ণয় করতে পারেন। সে তুলনায় স্বল্প প্রশিক্ষণে কবুতরগুলো যা করেছে তা বিস্ময়কর বলতেই হবে।’
কবুতরের দৃষ্টিক্ষমতা মানুষের মতোই। উল্টো কবুতর সূর্যের বেগুনি রশ্মি চিহ্নিত করতে পারে, যা মানুষ পারে না। যদিও কবুতরের মস্তিষ্ক মানুষের মস্তিষ্কের এক হাজার ভাগের এক ভাগ মাত্র।