ধান ও পাম চাষে ধ্বংস হচ্ছে ম্যানগ্রোভ বন

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো ধান ও পাম চাষ। এ দুটি ফসল চাষের জমি তৈরি করতে গিয়েই অনেক বনাঞ্চল ধ্বংস করা হচ্ছে। সম্প্রতি এমনটা দাবি করেছেন সিঙ্গাপুরের একদল গবেষক।
ফসলের চাষের সঙ্গে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ধ্বংসের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেছেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের একদল গবেষক। আর এ বিষয়ের গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস।
সিঙ্গাপুরের গবেষকরা ২০০০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এক যুগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আটটি দেশের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল এবং নিকটবর্তী এলাকার চাষাবাদ নিয়ে গবেষণা করেন। এতে দেখা যায়, ওই এক যুগ সময়ে শুধু ধান ও পাম চাষের কারণে ৩৮ শতাংশ বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে।
গবেষকরা বলেন, পরিবেশের কার্বন কমাতে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল বড় ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া এই বনাঞ্চল জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। আর সমুদ্র-তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের খাবার ও জ্বালানিতেও বড় ভূমিকা রাখে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের গবেষক ড্যানিয়েল রিচার্ডস বলেন, সমুদ্র-তীরবর্তী অঞ্চলের চাষাবাদই ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ধ্বংসের মূল কারণ। আর এ কারণে থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ধ্বংস হয়েছে।
ড্যানিয়েল রিচার্ডস আরো বলেন, ১৯৭০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ধসের মূল কারণ ছিল মৎস্য চাষ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের এমন বন কেটে সেখানে পুকুর করা হয়, যেখানে চিংড়ি চাষ করা হয়।
গবেষকরা বলেন, ২০০০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে মিয়ানমারের ২৫ হাজার হেক্টর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ধ্বংস করা হয়েছে। সেখানে এখন ধান উৎপাদন করা হয়।
গবেষকরা আরো বলেন, এর আগেও বিভিন্ন গবেষণায় ফসলের জমি তৈরির জন্য ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ধ্বংসের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে এই প্রথম এ ধ্বংসের হার জানা গেল। আর এই ধ্বংসের হার আশঙ্কাজনক বলেই মনে করেন গবেষকরা।