পৃথিবীর সব মশা মেরে ফেলা যায় না?

মশা আকৃতিতে বেশ ছোট হলেও পৃথিবীর ভয়ংকরতম প্রাণীর একটি। মশার কামড়ে হতে পারে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ নানা প্রাণঘাতী রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো প্রাণীর চেয়ে মশার কারণেই মৃত্যু হয় সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের।
রোগ ছড়ানো আর মানুষকে বিরক্ত করাই মশার কাজ। পরিবেশের ওপর মশার ইতিবাচক কোনো প্রভাব এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এ থেকে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, সব মশা মেরে ফেলা হয় না কেন? বিজ্ঞান-প্রযুক্তির এই উৎকর্ষের যুগে মানুষের হাতে কি কোনো অস্ত্র নেই, যা দিয়ে সব মশা মেরে ফেলা যায়?
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েসের মশক নিধন কর্মসূচির কর্মকর্তা রজার এস নেস্কির মতে, পৃথিবীর সব মশা মেরে ফেলা অসম্ভব কাজ। বর্তমানে বিজ্ঞানের কোনো শাখায়ই পৃথিবী সব মশা মেরে ফেলার মতো কোনো অস্ত্র তৈরি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো দেশ বা শহর কর্তৃপক্ষ যতই কীটনাশক ব্যবহার করুক না কেন, কিছু মশা রয়েই যায়। আর ওই মশা থেকে আবার বিপুল পরিমাণ মশা তৈরি হয়।
গবেষকরা বলেন, আগেও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক স্থানে মশা পুরোপুরি দূর করার চেষ্টা চালানো হয়। তবে প্রতিবারই টিকে থাকার লড়াইয়ে মশা জয়ী।
১৯৫০-৬০ দশকে মশা দূর করতে লাতিন আমেরিকায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। ব্যাপক হারে ডিডিটিসহ বিভিন্ন শক্তিশালী কীটনাশক ব্যবহার করা হয় পুরো মহাদেশে। কিছু সময়ের জন্য মশা দূর হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই ধীরে ধীরে মশা ফিরতে শুরু করে। ধারণা করা হয়, সেখানকার মশা দূর হলেও এশিয়া বা আফ্রিকার জাহাজ থেকে আবার মশা ফিরে আসে।
জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় ডিডিটি ও এর মতো শক্তিশালী কিছু কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে অনেক দেশে। এসব শক্তিশালী কীটনাশক ছাড়া মশার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণই কঠিন, সেখানে মশা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার চিন্তাই করা যায় না।
তবে মশা নিধনের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই আশাবাদী। নিত্যনতুন সব পদ্ধতি আসছে মশা নিধনের। ব্যাকটেরিয়া ছিটিয়ে দিয়ে মশার বাসস্থান নষ্ট করে দেওয়ার একটি পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা চলছে। অপর এক মশা নিধনের পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা চলছে, যেখানে প্রাণঘাতী রোগ ছড়িয়ে দেয় এমন সব মশা মারা যাবে।