অ্যাপল ওয়াচে আগ্রহ কম আইফোন ব্যবহারকারীদের
অ্যাপল ওয়াচ- গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটাই অ্যাপলের একমাত্র নতুন ধরনের প্রযুক্তিপণ্য। কিন্তু তারপরও সাড়া জাগাতে পারছে না অ্যাপল ওয়াচ। বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পরই অ্যাপল ওয়াচ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
রয়টার্স ও ইপসোসের এমন একটি জরিপে দেখা গেছে আইফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ মানুষের অ্যাপল ওয়াচের ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নেই। বাকি ৪০ শতাংশ অবশ্য ঘড়ির ব্যাপারে আগ্রহী।
আইফোন ব্যবহারকারীদের অ্যাপলের সবচেয়ে মূল্যবান গ্রাহক বলে মনে করা হয়। কারণ ঘড়িটির সব অপশন কাজে লাগাতে গেলে দরকার পড়বে আইফোনের। ঘড়িটি ব্যবহার করে গান শোনা, ফোন করা এবং মেইল চেক করা যাবে।
আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে বিক্রি শুরু হবে স্মার্টওয়াচের। আগাম অর্ডার নেওয়ার পর গ্রাহকরা তা হাতে পাবেন এই বছরের শেষের দিকে। উন্নত প্রযুক্তির এই ঘড়ির দাম রাখা হয়েছে ৩৫০ ডলার থেকে ১৭ হাজার ডলার পর্যন্ত। সবচেয়ে দামি ফোনে থাকছে ১৮ ক্যারেট সোনা।
বিটিআইজি বিশ্লেষক ওয়াল্টার পিসিক বলেন, ‘পৃথিবীজুড়ে ৫০ কোটি মানুষ আইফোন ব্যবহার করে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে ১০ কোটি ব্যবহারকারী।’
প্যাসিফিক ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু হারগ্রেভস বলেন, ‘কতজন মানুষ আইফোন ব্যবহারে আগ্রহী সেটা পরিষ্কার নয়। এটা নির্ভর করছে অ্যাপলের বিপণন পদ্ধতির ওপর। তারা কতজনকে উদ্বুদ্ধ করতে পারবে তার ওপরই নির্ভর করবে এর বিক্রি। অ্যাপলের ক্রেতাদের মন জয় করাটাই এ ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয়।’
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতেও অ্যাপল ওয়াচ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা ও তর্কবিতর্ক। গত ৯ মার্চ সানফ্রান্সিসকোতে অ্যাপল এই ঘড়ি প্রদর্শন করেছিল। মার্চের ৯ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ১৮ বছরের বেশি বয়সী দুই হাজার ৪৬৯ জন মার্কিন নাগরিকের ওপর অনলাইনে জরিপ চালায় ইপসোস। আইফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৩৯ শতাংশ অ্যাপল ওয়াচ কেনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ শতাংশ নিজেদের ‘অতিরিক্ত আগ্রহী’ হিসেবে দাবি করেছে।
রয়টার্সের জরিপে বলা হয়েছে, অ্যাপলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে অ্যাপল ওয়াচের ব্যাপারে ১৫ শতাংশ সাড়া ছিল ইতিবাচক এবং ৫ শতাংশ নেতিবাচক। আর বাকি ৮০ শতাংশ মানুষ ছিলেন নিরপেক্ষ।
অথচ আইফোন সিক্সের ঘোষণা হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ৫% আলোচনা ছিল ইতিবাচক, এর বিপরীতে নেতিবাচক আলোচনা ছিল শূন্যের কোটায়। ফেসবুক স্ট্যাটাস ও এ সংক্রান্ত লিংক শেয়ার এবং টুইটার বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে রয়টার্স।
অ্যাপল ওয়াচ সাড়া না জাগানোর অন্যতম কারণ পরিধানযোগ্য প্রযুক্তি নিয়ে সনি, স্যামসাং এবং এলজির মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও কাজ করছে। এসব প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে স্মার্টওয়াচ বাজারে নিয়ে এসেছে। এসব স্মার্টওয়াচে গুগলের তৈরি সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে।
রয়টার্স ও ইপসোসের জরিপে অংশ নেওয়া আইফোন ব্যবহারকারীদের ৪৪ শতাংশ মনে করেন স্মার্টফোনের মতো নিকট ভবিষ্যতে স্মার্ট ওয়াচও খুবই প্রয়োজনীয় একটি গ্যাজেট হয়ে উঠবে।