নোয়াখালী ও গোপালগঞ্জে জমজমাট হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/03/20/photo-1458410802.jpg)
প্রথমবারের মতো প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ। তাই কিছুটা ভয় কাজ করছিল নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহদী মুসাব্বের খানের। তবে পরীক্ষা শেষে জানালো ভালো লাগার কথা। ‘প্রথমে কিছুটা ভয় পেলেও পরে দেখি প্রোগ্রামিং বিষয়টা সত্যিই মজার’, জানাল মাহদী। শিক্ষার্থীদের এমন সব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নোয়াখালী ও গোপালগঞ্জে জমজমাট আয়োজনে হয়ে গেল জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আঞ্চলিক আয়োজন।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম অহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।
প্রধান অতিথি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আগামী দিনে দেশকে যারা নেতৃত্ব দেবে তাদের সব ধরনের শিক্ষার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিতেও দক্ষ হতে হবে। আর প্রযুক্তিতে ভালো হতে হলে প্রোগ্রামিং শেখার বিকল্প নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের প্রচুর মেধাবী প্রোগ্রামার প্রয়োজন যারা আগামী দিনে তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়ায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. মমিনুল হক, সিএসটিই বিভাগের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, রবির মার্কেট অপারেশন বিভাগের টেরিটরি এক্সিকিউটিভ মো. ফরহাদ আহমেদ।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে শুরু হয় কুইজ ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। দুটি প্রতিযোগিতায় ১২০০ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রোগ্রামিং বিষয়ে চলে প্রশ্নোত্তর ও আলোচনা পর্ব।
একই দিনে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দকার মো. নাসিরউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম এমরান হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন মো. শাহজাহান ও রবির খুলনা অঞ্চলের টেরিটরি ম্যানেজার মো. আজিয়ার রহমান। প্রতিযোগিতা সকাল ৮টায় শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে। পরে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দুই ক্যাটাগরিতে ২০ জন এবং কুইজে তিন ক্যাটাগরিতে ৬০ জন বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। আঞ্চলিক পর্বের পাশাপাশি সারা দেশে প্রতিযোগিতা উপলক্ষে চলছে অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম। সারা দেশে মোট এক হাজার হাইস্কুলে চলবে অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে এরই মধ্যে প্রায় ৫৫০টি স্কুলে অনুষ্ঠিত হয়েছে অ্যাক্টিভিশন।
দেশের হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আগ্রহী করে তোলা এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত বছর থেকে হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা আয়োজন শুরু করেছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। প্রতিযোগিতায় প্রোগ্রামিং ছাড়াও আইসিটি কুইজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চতুর্থ সেমিস্টার পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এবার ১৬টি আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ১৬টি শহরে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হচ্ছে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকা, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর, পাবনা, পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, কুমিল্লা, যশোর ও ময়মনসিংহ। সব অঞ্চলের বিজয়ীদের নিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজনে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ, প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাস্তবায়ন সহযোগী বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন), একাডেমিক সহযোগিতায় কোডমার্শাল এবং পার্টনার হিসেবে আছে কিশোর আলো, এটিএন নিউজ ও বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)।
প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানার ওয়েব ঠিকানা www.nhspc.org। এ ছাড়া ফেসবুক পেজেও বিস্তারিত জানা যাবে www.facebook.com/nhspcbd।