বিদায় উইন্ডোজ!

১৯৮৫ থেকে ২০১৫, দীর্ঘ ৩০ বছর। এই সুদীর্ঘ সময় ধরে প্রযুক্তিবিশ্বে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে একটি নাম- উইন্ডোজ। মাইক্রোসফটের তৈরি কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের বিভিন্ন সংস্করণ হয়তো আরো কয়েক দশক সদর্পে টিকে থাকবে। তবে চলতি বছরই হবে উইন্ডোজের সবশেষ সংস্করণ। মাইক্রোসফট কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা সম্প্রতি এই ঘোষণা দিয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষদিকে বাজারে আসবে উইন্ডোজ ১০। এরপর এই সিরিজের আর কোনো বড় সংস্করণ আসবে না। তবে এর মানে এই নয় যে উইন্ডোজ হারিয়ে যাবে। এই অপারেটিং সিস্টেমভিত্তিক সফটওয়্যার ও ছোটখাটো সংস্করণ হয়তো আসবে তবে কোনো উইন্ডোজ ১১ বা ১২ নয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে একটি কনফারেন্সে মাইক্রোসফটের উন্নয়নবিষয়ক নির্বাহী জেরি নিক্সন বলেন, ডেস্কটপ কম্পিউটারের বহুল ব্যবহৃত উইন্ডোজ সফটওয়্যারটিই সর্বশেষ সংস্করণ হবে উইন্ডোজ ১০। কনফারেন্সে জেরি নিক্সনের বক্তৃতায় মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেমসহ সফটওয়্যার তৈরির রীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে, উইন্ডোজ ১০ সংস্করণটির পর নতুন কোনো সংস্করণ আসবে না। তবে নির্দিষ্ট সময় পরপর উইন্ডোজ সংস্করণের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।
মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষ উইন্ডোজ ১০-এর পর অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারের নাম কী হবে এ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানায়নি।
প্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘গার্থার’-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট স্টিভ ক্লেনহানস বলেন, উইন্ডোজ-৯ বলে কোনো সংস্করণ মাইক্রোসফট আনেনি। প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি উইন্ডোজ-৮ থেকে উইন্ডোজ ১০-এ যাচ্ছে। এটি অপারেটিং সিস্টেমে বড় কোনো পরিবর্তনকেই ইঙ্গিত করে। তবে উইন্ডোজের সংস্করণ বন্ধ করে দিলে মাইক্রোসফটের নিজের ও ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়ার শঙ্কা তৈরি হবে। তবে উইন্ডোজ বন্ধ হওয়া মানেই এর পরিসেবা বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়। এই অপারেটিং সিস্টেমে সফ্টওয়্যারের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে বলে মাইক্রোসফট নিশ্চিত করেছে।
স্টিভ ক্নেনহানস মনে করেন, আগামী তিন বছরের মধ্যেই হয়তো মাইক্রোসফট নতুন কোনো অপারেটিং সিস্টেম আনবে। এই দীর্ঘ সময়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রোগ্রামারদের সঙ্গে নিয়ে মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী সফটওয়্যার নিয়ে গবেষণার সুযোগ পাবে। তিনি আরো জানান, মানুষকে নতুন অপারেটিং সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বোঝাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করবে মাইক্রোসফট।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইক্রোসফট বরাবরই উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারের হালনাগাদ সংস্করণ করে এসেছে। তাই উইন্ডোজই বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যবহারকারীরা কীভাবে নেবে এই নিয়েও মাইক্রোসফটকে ভাবতে হবে এবং এতে সৃষ্ট সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যও পদক্ষেপ নিতে হবে।