ঈদে ঘোরাঘুরি
৯০০ টাকায় ঘুরে আসুন লালাখালে
ঘোরাঘুরির জন্য আমাদের দেশের অনেকে শীত মৌসুমকে বেছে নিলেও হয়তো অনেকেই জানেন না, বৃষ্টির সময়ে নদীগুলো তার আসল রূপ ফিরে পায়। ঠিক তেমনি নীল জলের লালাখাল। বর্ষায় এটি যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে প্রকৃতিপ্রেমী আর সৌন্দর্য পূজারি পর্যটকদের। একেক ঋতুতে একেক রকম তার সৌন্দর্য, তবে বর্ষাতে এক ভিন্ন রূপের দেখা মেলে লালাখালে। সঙ্গে আছে লালাখালসংলগ্ন চা বাগানের মায়াবী দৃশ্য। সিলেট সীমান্ত থেকে অতি সন্নিকটে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি, সারা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা। আর সেই এলাকার জইন্তা পাহাড় থেকে নেমে আসা জলধারা এই লালাখাল হয়ে এসে মিলিত হয় সিলেটের সারি নদীর সঙ্গে। আর এই ঈদে যারা গৃহবন্দি থাকতে চান না, তাঁরা মাত্র ৯০০ টাকায় ঘুরে আসতে পারেন লালাখালে।
লালাখালের উৎস
ভারতের পারায়ার তর সারং ঝর্ণা থেকে প্রবাহিত জলধারাই এই লালাখাল এবং সারি নদীর পানির উৎস। অনেকে বলেন, এই সারং ঝর্ণা হতেই সারি নদীর নামকরণ করা হয়েছে। লালাখালের নীলাভ-সবুজ জলের মোহময়ী রূপ, তার সঙ্গে দুই পাশের ছোট ছোট চিরহরিৎ টিলা, আর পুরোটা জায়গাজুড়ে মাথার ওপর নীলাকাশ, আপনাকে মুগ্ধ হতে বাধ্য করবে।
যা দেখবেন
লালাখালে ঘুরতে গিয়ে চোখে পড়বে দূরে মেঘালয়ের পাহাড়গুলো। সারি নদীর পান্না সবুজ পানি, বালুবোঝাই নৌকা, মাঝেমধ্যে গ্রামীণ মানুষের কর্মব্যস্ততা, নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবনযাত্রা, যা সবই উপভোগ্য হবে লালাখাল যাত্রায়। স্বচ্ছ রঙিন জলরাশি আর দুধারের অপরূপ সৌন্দর্য, নৌকা ভ্রমণ যেকোনো পর্যটকের কাছে আকর্ষণীয়। তেমনি এক নির্জন মনকাড়া স্থান লালাখাল। আপনি দেখতে পাবেন নদীর পাড়ের মানুষের জীবনধারা। সঙ্গে আছে লালাখাল চা বাগান। এখানকার মানুষের জীবন খুব সাধারণ নাগরিকতার নষ্ট ছোঁয়া তাদের স্পর্শ করেনি।
যে পথে যাবেন
লালাখালে যেতে হলে ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনযোগে সিলেট যেতে পারেন, ভাড়া ২৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। পরে মাইক্রোবাস ভাড়া করে সরাসরি যেতে পারবেন সারিঘাটে, ভাড়া পড়বে দুই হাজার টাকা থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা। অথবা সিএনজি করে সিলেটের শিশু পার্কের সামনে থেকে লেগুনা অথবা জাফলংয়ের বাসে চেপে সিলেট-তামাবিল সড়ক ধরে যেতে হবে সারিঘাট, ভাড়া নেবে ৫০ থেকে ২০০ টাকা করে প্রতিজন।
সতর্ক থাকবেন
যেকোনো ভ্রমণে নিরবচ্ছিন্ন আনন্দ উপভোগের জন্য প্রয়োজন দুর্ঘটনা এড়ানো। অদ্ভুত নীল পানি আর ঘন জঙ্গলে বেষ্টিত লালাখালে গেলে তাই চাই বাড়তি সতর্কতা। পানিতে নামার সময় খেয়াল রাখবেন, পানির গভীরতা কতটুকু? প্রয়োজনে গাইড কিংবা সঙ্গে যাওয়া কারো সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে। আর ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা! সন্ধ্যার আগে-পরে তাদের পানিতে না নামাই ভালো। স্থানীয়দের মুখে প্রচলিত আছে, অনেক শিশুকেই নাকি বাকপ্রতিবন্ধী হতে হয়েছে। মাঝেমধ্যে নানা অসুখও হয়ে থাকে সতর্কতা অবলম্বন না করার ফলে। নদীপথে সন্ধ্যায় নির্জন এলাকা পাড়ি দেওয়াটা সব সময় নিরাপদ নাও হতে পারে। এ জন্য সতর্ক থাকতে হবে।