পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিন
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/12/18/photo-1513589255.jpg)
দেশের দক্ষিণ জনপদে উচ্চশিক্ষা প্রসারের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।এ অঞ্চলের অবহেলিত জনগণের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষা সহজলভ্য করাই ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য। দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ও জীবনমান উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে বিশেষ অবদান।
জন্মকথা
২০০০ সালের ৮ জুলাই পটুয়াখালী কৃষি কলেজের অবকাঠামোতেই পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তদানীন্তন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কৃষি অনুষদে শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিতে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কৃষি, কম্পিউটার সায়েন্স, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, মাৎস্যবিজ্ঞান, ভেটেরিনারি মেডিসিন, দুর্যোগব্যবস্থাপনা, পুষ্টি বিজ্ঞান ও ভূমি ব্যবস্থাপনাসহ মোট আটটি অনুষদ রয়েছে।
যা দেখতে পাবেন
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশোভিত গেইটের মধ্যদিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে প্রথমেই চোখে পড়বে প্রশাসনিক ভবন। প্রশাসনিক ভবনটির সামনেই রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের ভাস্কর্য। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের শাশ্বত চেতনা ও স্বাধীনতা আন্দোলনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সদা জাগরিত রাখত ক্যাম্পাসে নির্মিত হয়েছে ‘জয় বাংলা’ নামে একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য। সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে আরো মনোরম করে তুলেছে লালকমল, নীলকমল ও সালসাবিল নামক তিনটি লেক। লালকমলের পানিতে ভেসে ওঠা একাডেমিক ভবনের প্রতিচ্ছবি ও আসাধারণ নির্মাণ শৈলী দিয়ে তৈরি করা একটি সেতু ক্যাম্পাসটিতে দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা নিশ্চত করতে এখানে রয়েছে শের-ই-বাংলা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, কবি বেগম সুফিয়া কামাল ও এম কেরামত আলীর নামে মোট ছয়টি আবাসিক হল। এ ছাড়া বরিশালে অবস্থিত ক্যাম্পাসে রয়েছে আরো চারটি হল। শের-ই-বাংলা হলের সামনের বিশাল খেলার মাঠ ও রাস্তা জুড়ে থাকা সারিবদ্ধ মেহগনি গাছের পাতা ছোঁয়া স্নিগ্ধ বাতাস মনে এনে দেয় অফুরান প্রশান্তি। যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য রয়েছে নীলবাস যা এখানকার শিক্ষার্থীদের আনন্দের প্রতীক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ঘেঁষে রয়েছে অত্যন্ত সুন্দর স্থাপত্যশিল্প সমৃদ্ধ একটি মসজিদ। গবেষণাকাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা বিশাল গবেষণা খামারের ভেতর রয়েছে একটি জার্মপ্লাজম সেন্টার। যেখানে দেখা মিলবে বিলুপ্তসব গ্রামীণ ফলফলাদি ও দেশি-বিদেশি দামি উদ্ভিদের সমাহার। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিসরোড, বকুলতলা ও জয়বাংলাসহ কয়েকটি স্পট বিশ্ববিদ্যায়টিকে করে রাখে প্রাণবন্ত ও মুখরিত।
যাতায়াত
ঢাকা থেকে সড়ক ও নৌপথে সরাসরি পটুয়াখালী আসা যায়। সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে সাকুরা, ঈগল, সোনারতরী, সুরভী ও কনকসহ বিভিন্ন বাস সার্ভিস যোগে পটুয়াখালী পৌঁছাতে জনপ্রতি খরচ হবে ৪০০-৬০০ টাকা। অপরদিকে সদরঘাট থেকে সুন্দরবন, কাজল, সাত্তার খান, প্রিন্স আওলাদ ও এ. আর খান লঞ্চ যোগে পটুয়াখালী পৌঁছোতে লাগবে ৩০০-১০০০ টাকা। এ ছাড়া আকাশ পথে বরিশাল পর্যন্ত আসা যাবে। সেখান থেকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে খরচ হবে ১৫০-২০০ টাকার মতো।
থাকা-খাওয়া
পটুয়াখালী জেলা শহরে থাকার জন্য রয়েছে প্রায় ১৫টি আবাসিক হোটেল। এসব হোটেলে রয়েছে থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা। এখানকার সামুদ্রিক মাছ ও পায়রা নদীর ইলিশ খুবই বিখ্যাত।