১৮০ টাকায় নুহাশপল্লীতে
ঢাকার অদূরে গাজীপুরেই রয়েছে প্রাকৃতিক নৈসর্গ নুহাশপল্লী। পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র ও শুটিংস্পট হিসেবে এটি বেশ পরিচিত। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া বাজার। সেখান থেকে আট কিলোমিটার দূরে পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত নুহাশপল্লী। হুমায়ূন আহমেদের বড় ছেলে নুহাশ হুমায়ূনের নামানুসারে পল্লীটির নাম রাখা হয় ‘নুহাশপল্লী’। ৪০ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত নুহাশপল্লীর মূল ফটক পেরোলেই চোখে পড়বে সবুজ ঘাসের গালিচা। যা দেখলে যে কারো চোখ ও মন দুই জুড়িয়ে যাবে। আপনি চাইলে ঘুরে আসতে পারেন নুহাশপল্লীতে। আর খরচের কথা ভাবছেন মাত্র ১৮০ টাকা।
যা দেখবেন
নুহাশপল্লীতে প্রবেশপথের পরই হাতের বাঁ দিকে দৃষ্টিনন্দন সবুজ প্রান্তর চোখে পড়বে। এই প্রান্তরের বাঁ পাশের লিচু বাগানে শায়িত আছেন গল্পের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ। নুহাশপল্লীর প্রবেশপথ ধরে এগিয়ে গেলেই স্থানীয় স্থপতি আসাদুজ্জামান খানের ‘মা ও শিশু’ নামক ভাস্কর্যটি দেখেতে পাবেন। শিশুদের বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ভূত ও ব্যাঙের আকারের ভাস্কর্য। এর পাশেই তৈরি করা হয়েছে আঁকাবাঁকা সুইমিংপুল। ভারতের প্রখ্যাত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এই সুইমিংপুলেই সাঁতার কেটেছিলেন। সুইমিংপুল পেরিয়ে সামনে এগিয়ে গেলেই একে একে দেখতে পাওয়া যায় হুমায়ূন আহমেদের কটেজ, দাবা খেলার ঘর এবং নামাজ পড়ার স্থান। এর পরেই রয়েছে বিশাল টিনশেডের বারান্দাসহ ‘বৃষ্টিবিলাস’ কটেজ। এই কটেজের বারান্দাতে বসেই হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি ও পূর্ণিমা দেখতে পছন্দ করতেন। ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে তাঁর বিখ্যাত ট্রি হাউস। নুহাশপল্লীতে রয়েছে একটি ঔষধি গাছের বাগান। এ ছাড়া রয়েছে প্রায় ৩০০ প্রজাতির বিভিন্ন গাছ। ঔষধি গাছের বাগানের পেছনে রয়েছে টিন এবং কাদামাটি দিয়ে তৈরি করা শুটিং স্পট। আর বাগানের সামনের দিকে রয়েছে মৎস্যকন্যা ও রাক্ষসের মূর্তি। এর পাশে কংক্রিট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ডাইনোসারের মূর্তি। নুহাশপল্লীর সর্বউত্তরে রয়েছে লীলাবতী দিঘি। এই দিঘির মাঝখানে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম দ্বীপ, যা একটি কাঠের সেতুর সঙ্গে যুক্ত। লীলাবতি দিঘির পাশেই রয়েছে ‘ভূতবিলাস’ নামক আরো একটি ভবন। এ ছাড়া সাজানো-গোছানো নুহাশপল্লীতে একটি দিন কাটানোর ক্ষণে ক্ষণেই আপনি সমস্ত নুহাশপল্লীতে কবির অস্তিত্ব অনুভব করবেন।
যেভাবে যাবেন
নুহাশপল্লীতে যেতে প্রথমে গাজীপুরের হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে আসতে হবে। ঢাকা থেকে প্রভাতী, বনশ্রী ইত্যাদি বেশ কিছু বাস সার্ভিস চলাচল করে। ঢাকা থেকে হোতাপাড়া যেতে বাসে চড়ার স্থানভেদে ভাড়া লাগবে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে টেম্পো, রিকশা অথবা সিএনজিতে করে নুহাশপল্লী যাওয়া যায়। টেম্পোর ভাড়া লাগবে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। রিকশা ভাড়া লাগবে ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং সিএনজি ভাড়া লাগবে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। চাইলে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও বেড়াতে যেতে পারবেন নুহাশপল্লী।