ছুটির দিনে
চলুন যাই ১৭০০ টাকায় রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ডে
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/08/29/photo-1535543195.jpg)
উপরে মাছ, ডানে মাছ, বামে মাছ। অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছের ভিতর দিয়ে পথ চলতে হবে। তবে হঠাৎ হাঙ্গর সামনে এসে উপস্থিত হয়ে যেতে পারে। মানুষ খেকো মাছ পিরানহা ধারালো দাঁত খুলে হা করে ছুটে আসতে পারে। গায়ে লেগে যেতে পারে কুচিয়া, কচ্ছপ, কাঁকড়া, আউসসহ সাগরের তলদেশের নানা কিট পতঙ্গ। এর মাঝে সাগরের তলদেশের গাছ পালা, লতা, পাতা, গুল্ম, ফুল গায়ে পরশ লাগিয়ে দেবে। সাগরের পাহাড়, গুহা, তলদেশ উঁচু নিচু আর এলোমেলো সাগর পথ পাড়ি দিতে দুই ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হবে। এমন অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণ বিনোদনের জন্য আপনাকে যেতে হবে কক্সবাজারে নির্মিত প্রথম আন্তর্জাতিক মানের ফিশ অ্যাকুরিয়াম রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ডে।
যা আছে-
বিরল প্রজাতির মাছসহ এখানে আছে হাঙ্গর, পিরানহা, শাপলাপাতা, পানপাতা, কাছিম, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শৈল, পিতম্বরী, সাগর কুঁচিয়া, বোল, জেলিফিশ, চেওয়া, পাঙ্গাস, আউসসহ আরো অনেক মাছ ও জলজ প্রাণী।
যা দেখবেন
প্রবেশ পথে দিকে এগিয়ে গেলে দূর থেকে মনে হলো বিশাল আকৃতির একটি হাঙর হা করে আছে আপনাদের দিকে। আর এই হাঙরের মুখ দিয়েই ফিশ অ্যাকুরিয়াম কমপ্লেক্সের ভেতরে প্রবেশ করতে হবে আপনাকে । আশপাশে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পুকুর ও সমুদ্রের গভীর তলদেশে প্রাণী বসবাসের চিত্র। রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড ভেতরে প্রবেশ করে মনে হবে এ যেন এক অন্য ভুবনে এসে প্রবেশ করেছি । ডানে, বায়ে আর এদিকে ওদিক ছুঁটছে মাছের দল। হঠাৎ বিশাল আকৃতির হাঙ্গরের উপস্থিতিতে আতকে উঠছে অনেকে। ধারালো দাঁত বের করে রাক্ষুসে পিরানহা ছুটে আসতে পারে মুহূর্তেই। শরীর ঘেষে চারদিকে বিচরণ করছে মাছের দল। এ যেন মাছের রাজ্যে মানুষের বসবাস। আর আপনার চারপাশে খেলা করছে বর্ণিল প্রজাতির মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী। প্রতিটি মাছের নাম এবং তাদের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করা আছে এখানে । ভেতরে নান্দনিক শিল্পকর্ম। নানান রকমের বাতির আলোর ঝলকানি ঝলমল করছে চারদিক। চোখ ধাঁধানো কারুকাজ। দুই পাশে বিভিন্ন সাইজের অ্যাকুরিয়াম। এসব অ্যাকুরিয়ামে রয়েছে নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, মিঠা পানির মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী। হাটঁতে হাঁটতে মনে হবে যেন সাগর তলদেশে হাঁটছেন। আর আপনার চারপাশে খেলা করছে বর্ণিল প্রজাতির মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী। এই অ্যাকুরিয়ামে বঙ্গোপসাগরের থাকা বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মৎস্য সংক্ষণ করা হয়েছে। অচেনা এবং বিলুপ্ত প্রায় অনেক মাছও রয়েছে। সাগরের বিলুপ্ত মাছ বিভিন্ন প্রাণী সংরক্ষণে একটি জাদুঘরও করা হচ্ছে। এটা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এটি সাগরের জীববৈচিত্র্য ও প্রাণী সম্পর্কে জানার একটি শিক্ষা কেন্দ্র। এখানে রয়েছে থ্রি-নাইন ডি মুভি দেখার নান্দনিক স্পেস, লাইফ ফিশ রেস্তোরাঁ, দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি, শিশুদের খেলার জায়গা, ছবি তোলার আকষর্ণীয় ডিজিটাল কালার ল্যাব, কেনাকাটার জন্য রয়েছে শপের ব্যবস্থা। ছাদে প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি বার-বি-কিউ আয়োজনের ব্যবস্থাও রয়েছে। বাচ্চাদের খেলা করার জন্য রয়েছে শিশুপার্ক। ছোট ছোট ঝরনার পানিতে দেখা মিলবে ছোট ছোট সামুদ্রিক মাছের। চোখে পড়বে সাগরের বাস করা বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। বিশাল জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই ফিশ ওয়ার্ল্ড। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্যও রয়েছে প্রশস্ত জায়গা। পুরোটা ঘুরে দেখতে প্রায় দুই ঘণ্টার সময় লাগবে। প্রবেশ ফি ৩০০ টাকা।
কীভাবে যাবেন
এই ফিশ অ্যাকুরিয়াম দেখতে আপনাকে যেতে হবে কক্সবাজার। বাসভাড়া ঢাকা থেকে ৮০০ টাকা থেকে শুরু। বাসসার্ভিস ভেদে আরো বেশি । তাই দেশের যে প্রান্তেই থাকুন প্রথমেই চলে আসুন কক্সবাজার। কক্সবাজার দর্শনী স্থান ঘুরে দেখার পাশাপাশি হাতে কয়েক ঘণ্টা সময় নিয়ে চলে যেতে পারেন এই জলজ জগতে। কক্সবাজার যেখানেই থাকেন সেখান থেকে অনায়াসে সিএনজি/ইজিবাইক/অটোরিকশা দিয়ে যেতে পারবেন। কলাতলী বিচের সড়কেই পাবেন সব যানবাহান। যেতে হবে ঝাউতলা, প্রধান সড়ক, কক্সবাজার। ইজিবাইক রিজার্ভ নিলে ভাড়া নিবে ৫০-৭০ টাকা। লোকাল ইজিবাইকে ১০-১৫ টাকা দিয়েই চলে যেতে পারবেন ঝাউতলা। পৌষী রেস্টুরেন্টের সামনের মোড় থেকে হাতের বাম পাশে অল্প কয়েক কদম গেলেই পেয়ে যাবেন রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড। সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্যে খোলা থাকে।