ঈদের ছুটিতে
দেখে আসুন গুঠিয়া বায়তুল আমান মসজিদ
বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের গুঠিয়া ইউনিয়নের চাংগুড়িয়া গ্রামে অবস্থিত গুঠিয়া বায়তুল আমান মসজিদ। মূল সড়কের পাশে হওয়াতে বরিশাল থেকে সড়কপথে স্বরূপকাঠি কিংবা বানারীপাড়া যেতেই চোখে পড়বে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর এ মসজিদটি। মুলত এর শৈল্পিক বৈচিত্র্যের জন্যই বিশ্বব্যাপী সমাদৃত এ মসজিদ। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্যালেন্ডারে বিদেশি মসজিদের সঙ্গে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের গুঠিয়া বায়তুল আমান মসজিদ।
জানা গেছে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু নিজ গ্রামে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন। মসজিদের ডিজাইন পছন্দ করার জন্য নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টেক লিমিটেডের প্রকৌশলীদের নিয়ে পৃথিবীর ২২টি দেশের সুন্দর স্থাপনাশৈলীর মসজিদগুলো ঘুরে একটি সুন্দর নকশা তৈরি করেন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা। ২০০৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০০৬ সালে সমাপ্ত হয়। প্রায় তিন বছরে দুই লাখ ২০ হাজার শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে পরিপূর্ণতা পায় গুঠিয়া বায়তুল আমান মসজিদ। মসজিদের পাশেই মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন ‘মালেকা বেগম হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা’
বিশেষত্ব
মসজিদের সামনে তৈরিকৃত স্তম্ভটিতে ব্যবহৃত হয়েছে- পবিত্র কাবা ঘরের মাটি, মসজিদে নববী, জান্নাতুল বাকী, জাবালে নূর, আরাফাতের ময়দানের মাটি, মহনবী (সা.)-এর জন্মস্থানের মাটিসহ পৃথিবীর ২১টি পবিত্র স্থানের মাটি ও জমজম কূপের পানি। মসজিদটি নির্মাণে- কাচ, মার্বেল পাথরসহ উন্নতমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহৃত হয়েছে। প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জুমার নামাজ আদায় করতে আসে মুসল্লিরা। মসজিদে পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রয়েছে।
১৪ একর জমির ওপর নির্মিত এ মসজিদের চারপাশে ছোটবড় মোট ২০টি গম্বুজ ও ১৯৩ ফুট উচ্চতার একটি মিনার রয়েছে। ২০ হাজার মানুষ ধারণক্ষমতা সমৃদ্ধ এ মসজিদে আরো রয়েছে ঈদগাহ ময়দান, কবরস্থান, এতিমখানা, হাফিজি মাদ্রাসা, গাড়ি পার্কিং এলাকা, সীমানাজুড়ে মায়াবী লেক, একটি দীঘি, নার্সারি, ফলের বাগান। পুকুরে ওজু কিংবা গোসলের জন্য রয়েছে টাইলস করা একটি সুন্দর ঘাট, তার উপরেই দুটি বাদাম গাছ সামিয়ানার মতো ডাল বিছিয়ে দিয়েছে ঘাটলাজুড়ে।
যাতায়াতের ব্যবস্থা
ঢাকা থেকে লঞ্চ/গাড়িতে বরিশাল আসতে হবে। বরিশাল নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতি ১৫ মিনিট পরপর স্বরূপকাঠির বাস ছেড়ে যায়। বরিশাল থেকে গুঠিয়া মসজিদ ভাড়া ২০ টাকা।
বি.দ্র. পর্যটকদের জন্য প্রতিদিন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দুপুর ২টা এবং বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে, এ ছাড়া প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জুমার নামাজের জন্য খোলা থাকে।