আন্তর্জাতিক আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করল মিয়ানমার
রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে বলা জাতিসংঘের বিচার আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) রায় প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, এতে পরিস্থিতির খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
আইসিজের এই রায়ের পর আপিলের আর কোনো সুযোগ নেই। তবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত মিয়ানমারকে রায় মানতে বাধ্য করতেও পারবে না। তেমন কোনো উপায় আইসিজের হাতে নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেওয়া রায়ে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার করা মামলায় মিয়ানমার সরকারকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় আইসিজে। একই সঙ্গে সরকার নিয়ন্ত্রিত বাহিনী ও গোষ্ঠীগুলো যেন রাখাইনে আর কোনো ধরনের গণহত্যার ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সে বিষয়েও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন আদালত। কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সে বিষয়ে আগামী চার মাসের মধ্যে মিয়ানমার সরকারকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশও দেন আইসিজে।
এর জবাবে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তাদের স্বাধীন তদন্ত কমিশন রাখাইনে গণহত্যার কোনো প্রমাণ পায়নি। তবে যুদ্ধাপরাধ ঘটেছে। যেটার বিচার মিয়ানমারের অপরাধ আদালতের মাধ্যমেই সম্পন্ন করা সম্ভব।
এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র দপ্তর আরো একধাপ এগিয়ে বলেছে, ‘কিছু মানবাধিকারকর্মীর’ নিন্দামন্দের ফলে কয়েকটি দেশের সঙ্গে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে টান পড়েছে। রাখাইনের টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি নির্মাণের পথেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে এসব।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি শুরু হয়, যা চলে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তিন দিনের ওই শুনানিতে উভয় পক্ষ তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে। শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার আইসিজের প্রধান বিচারপতি আবদুল কাভি আহমেদ ইউসুফ রায় ঘোষণা করেন।
মিয়ানমার শুরু থেকে বলে আসছে, রাখাইনে সন্ত্রাস দমনে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছিল। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে এই বিচারের শুনানিতে গিয়েও মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো সহিংসতাকে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশিচৌকিতে রোহিঙ্গাদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ‘অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘাত’ বলে উল্লেখ করেন।