ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে পার্লামেন্ট
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদিল আবদুল মাহদির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। প্রেসিডেন্ট সালিহ বারহামকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হবে বলে জানিয়েছেন পার্লামেন্টের স্পিকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইরাকে টানা সরকারবিরোধী রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের পর গত শনিবার দেশটির পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন মাহদি। গতকাল রোববার তাঁর পদত্যাগপত্র নিয়ে আলোচনা করেন আইন প্রণেতারা। পরে তাঁর পদত্যাগপত্র পার্লামেন্টে গৃহিত হয়।
পদত্যাগের পর মন্ত্রিসভায় এক ভাষণে আবদুল মাহদি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পর এখন পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে, নতুন কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত করতে পদত্যাগ করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
ইরাকে চলমান বিক্ষোভ ও সহিংসতা প্রসঙ্গে মাহদি বলেন, সরকার বিক্ষোভকে শান্তিপূর্ণ হিসেবে গণ্য করে পদক্ষেপ নিলেও এতে দুর্বৃত্তরা ঢুকে পড়ে।
আবদুল মাহদি আরো বলেন, রক্তপাত এড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছে সরকার। কিন্তু কেউ কেউ দাঙ্গা ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
এর আগে গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন আবদুল মাহদি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৪৫ বিক্ষোভকারী নিহতের ঘটনায় চাপের মুখে এ ঘোষণা দেন তিনি।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে আবদুল মাহদি জানান, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।
ইরাকের নাজাফে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেট পুড়িয়ে দেওয়ার পর দেশটির বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বৃহস্পতিবার অন্তত ৪৫ বিক্ষোভকারী নিহত ও দুই শতাধিক আহত হওয়ার পরদিনই এ ঘোষণা দেন আবদুল মাহদি। ওই হতাহতের ঘটনাকে ২০০৩ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করেছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।
বেকার সংকট দূর করা, সরকারের দুর্নীতি বন্ধসহ সরকারি সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে গত অক্টোবর থেকে ইরাকের রাজধানী বাগদাদসহ বিভিন্ন শহরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর থেকে বাগদাদসহ কয়েকটি শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৪০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া আহত হন আরো ১৫ হাজার মানুষ।