ইয়েমেনে প্রায় ছয় বছর ধরে চলা যুদ্ধ অবসানে নতুন একটি শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে প্রতিবেশী দেশ সৌদি আরব। শান্তি পরিকল্পনায় জাতিসংঘের তদারকিতে ইয়েমেনে সৌদি সমর্থিত সরকার ও ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ শান্তি পরিকল্পনায় ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ আকাশপথ ও সমুদ্রপথগুলো খুলে দেওয়ার এবং রাজনৈতিক আলোচনা শুরুর কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু ইয়েমেনের আকাশে ও সমুদ্রে আরোপ করা অবরোধ তোলার ক্ষেত্রে এসব প্রস্তাব খুব বেশি দূরে যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হুতিরা।

গতকাল সোমবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাবগুলো ঘোষণা করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সল বিন ফারহান। ঘোষণার পর ইয়েমেনের অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী হুতিদের প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি। হুতিরা প্রস্তাবগুলো যখনই গ্রহণ করবে তখনই অস্ত্রবিরতি শুরু হবে বলে এ সময় জানান প্রিন্স ফয়সল।

ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার এসব প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে, কিন্তু এ উদ্যোগে ‘নতুন কিছু নেই’ বলে মন্তব্য করেছে হুতিরা।

ইয়েমেনের রাজধানী সানার বিমানবন্দর ও পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দর হুদায়দাহ থেকে অবরোধ পুরোপুরি তুলে নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাবে কিছু বলা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে তারা।

হুতিপক্ষের প্রধান আলোচক মোহাম্মদ আব্দুল সালাম বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম সৌদি আরব সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরগুলোর অবরোধ শেষ করার ঘোষণা দেবে ও জোট বাহিনীর হাতে আটক ১৪টি জাহাজকে অনুমতি দেওয়ার উদ্যোগ নেবে।’

তবে তারা সৌদি, যুক্তরাষ্ট্র ও ওমানের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ আব্দুলসালাম।

এদিকে সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা তাদের পদক্ষেপের বিষয়ে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলছেন।

ইয়েমেনের যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রও উদ্যোগ নিয়েছে। এই যুদ্ধে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।

মাত্র কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের দেশজুড়ে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হুতিরা।

সৌদি আরবের জ্বালানি ও নিরাপত্তা অবকাঠামোগুলোতে হুতিদের ক্রমবর্ধমান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময়টিতেই এই শান্তি প্রস্তাব দিল রিয়াদ।