কবি শঙ্খ ঘোষ অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি
অসুস্থ কবি শঙ্খ ঘোষ। শ্বাসনালিতে সংক্রমণ নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার মুকুন্দপুরের আমরি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কবি। গত সোমবার থেকেই তাঁর শ্বাসনালির সংক্রমণের সমস্যা বাড়ছিল। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁর তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপর ওই দিনই দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ৮৭ বছর বয়সী শঙ্খ ঘোষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের নিয়মিত চিকিৎসকের পাশাপাশি তাঁর পারিবারিক চিকিৎসকও নজর রাখছেন কবির দিকে।
হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সি কে মাইতির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সর্বশেষ জানা যায়, কবি শঙ্খ ঘোষের জ্বর রয়েছে, সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মাত্রাও ওঠানামা করছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত কবির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। এরই মধ্যে কবি শঙ্খ ঘোষের চেস্ট এক্স-রে, সিটি স্ক্যানসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা তাঁর যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জানা গেছে, ফুসফুসের সংক্রমণের পাশাপাশি প্রস্রাবের নালিতেও সংক্রমণ রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া কবি বেশ কিছুদিন ধরেই পারকিনসন’স রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আপাতত ভয়ের কোনো কারণ নেই। তবে একদিকে বয়সজনিত রোগ এবং অন্যদিকে পারকিনস’স থাকায় কিছুটা চিন্তা রয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। সমাজের বিভিন্ন সমস্যায় বারবার গর্জে উঠেছে তাঁর কলম। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে তিনি লিখেছিলেন ‘মাটি’ কবিতা। যে কবিতার মাধ্যমে কবি নিজের অন্তরের গ্লানির কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন।
এ ছাড়া ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’ এবং ‘বাবরের প্রার্থনা’র অমর স্রষ্টা কবি শঙ্খ ঘোষ বারবার ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনায় প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ জ্বেলেছেন নিজের ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে। তাঁর লেখনী বরাবর পাঠককুলকে মুগ্ধ করেছে। এদিকে সমসাময়িক কালে পশ্চিম বাংলার অন্যতম সেরা কবি শঙ্খ ঘোষের শারীরিক অসুস্থতার খবরে চিন্তিত তাঁর গুণমুগ্ধরা।
২০১১ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন কবি শঙ্খ ঘোষ। ২০১৬ সালে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পান তিনি। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’র জন্য পেয়েছিলেন সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। ১৯৯৯ সালে কন্নড় নাটক ‘রক্তকল্যাণ’ অনুবাদ করেও সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।