করোনার সম্ভাব্য ৯ ভ্যাকসিন : কতদূর এগোল কাজ
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি নিয়ে কাজ করছে একাধিক দেশ ও সংস্থা। এদের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নজর রাখছে কয়েকটি ভ্যাকসিনের ওপর। তেমনই নয়টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের কাজ কতদূর এগিয়েছে, তা জানা গেছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে।
মডার্না ভ্যাকসিন
যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না থেরাপিউটিকস জানাচ্ছে, তারা মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কাছ থেকে নিজেদের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালের জন্য ছাড়পত্র পেয়েছে। এ ভ্যাকসিন এরই মধ্যে ৪৫ স্বেচ্ছাসেবীর ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে। এবার ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী ৬০০ স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে এটি পরীক্ষা করা হবে।
আইএনওভিআইও ভ্যাকসিন
সান ডিয়াগোর গবেষণাগারে ডিএনএ-ভিত্তিক ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করছে আইএনওভিআইও ফার্মাসিউটিক্যালস। এরই মধ্যে তারা ৪০ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবীর ওপর ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রথম ধাপের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।
চলতি মে মাসের শেষ সপ্তাহে দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। এ পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরে আইএনও-৪৮০০ নামের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হবে। আগামী জুনের শেষ নাগাদ পরীক্ষার ফল জানা যাবে। এরপরই তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু করবে প্রতিষ্ঠানটি।
নোভাভ্যাক্স ভ্যাকসিন
নোভাভ্যাক্স সম্প্রতি ৩৮ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলারের অর্থ সাহায্য পেয়েছে ভ্যাকসিন তৈরির জন্য। সার্স কোভিড-২ ভাইরাসের জিন থেকে সিঙ্গেল এবং ডাবল ডোজের এ ভ্যাকসিন ইঁদুরের দেহে প্রয়োগ করে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে।
ফিজার ও বিএনটেক ভ্যাকসিন
মার্কিন ও জার্মান গবেষকদল একযোগে কাজ করছে এই আরএনএ ভ্যাকসিন নিয়ে। প্রথম দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়ে গেছে জার্মানিতে। যুক্তরাষ্ট্রে খুব শিগগির ৩৬০ জনের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে এটি।
জনসন অ্যান্ড জনসন ভ্যাকসিন
জনসন অ্যান্ড জনসন সংস্থার দাবি, ২০২১ সালের শুরুতেই ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ এবং বছর শেষে ১০০ কোটি ভ্যাকসিন বাজারে আনতে পারবে তারা। ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হবে আগামী সেপ্টেম্বরে।
সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন
চীনের বেইজিং-ভিত্তিক সিনোভ্যাক বায়োটেকের ভ্যাকসিনটি বানরের শরীরে সফলভাবে কাজ করেছে। এখন অপেক্ষা দ্বিতীয় দফা ট্রায়ালের।
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন
সারা পৃথিবীতে হৈচৈ এ ভ্যাকসিন নিয়ে গত এপ্রিল থেকে। গবেষকদের দাবি, আগামী সেপ্টেম্বরেই বাজারে আসতে পারে ভ্যাকসিন।
সানোফি ভ্যাকসিন
ফরাসি প্রতিষ্ঠান সানোফি করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে হাত মিলিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের সঙ্গে। ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন তৈরির প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনার ভ্যাকসিন তৈরি নিয়ে পরীক্ষা চলছে গবেষণাগারে। এ বছরের জুনের পর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাবে সানাফি-গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের ভ্যাকসিনটি। আগামী বছরের জুনের পর ভ্যাকসিন বাজারে আনার ব্যাপারে আশাবাদী তারা।
ক্যানসিনো ভ্যাকসিন
করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চীনের ক্যানসিনো বায়োলজিকস অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটির এডি৫-এনসিওভি নামে করোনা ভ্যাকসিন এরই মধ্যে গত এপ্রিলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ পরীক্ষার প্রথম ধাপ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি ইবোলার ভ্যাকসিন তৈরি করেছিল।