খাদ্য অপচয় ঠেকাতে আইন হচ্ছে চীনে
সম্প্রতি ‘প্লেট খালি করে খাও’ ক্যাম্পেইন চালু করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। অপচয়ের বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধ এবার আইনে পরিণত হতে যাচ্ছে। যেসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কারণে খাবার অপচয়ের ঘটনা ঘটে, তাদের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের জরিমানা ধার্য করে আইনের খসড়া অনুমোদনের জন্য চীনা কংগ্রেসে জমা দিয়েছে দেশটির সরকার। চীনের সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া ও যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত আগস্টে এক বক্তৃতায় শি জিনপিং বলেন, ‘দেশজুড়ে যে হারে খাবার অপচয় হয় তা আশ্চর্যজনক ও বিরক্তিকর।’ ওই বক্তব্যে তিনি ‘অপচয়কে লজ্জাজনক আর মিতব্যয়িতাকে সম্মানজনক’ বলে আখ্যা দেন।
ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে গত মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত একটি ড্রাফ্ট পেশ করেছে। যাতে বলা হয়েছে, যদি কোনো রেস্তোরাঁ অতিরিক্ত খাবার বানায়, এবং তার জন্য খাবার নষ্ট হয়, তা হলে প্রশাসন তাদের জরিমানা করতে পারবে। পাশাপাশি কেউ কোনো রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে যদি খাবার নষ্ট করে, খালি প্লেটের বদলে খাবারসহ প্লেট রেখে চলে আসে, তাহলে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষও ওই ভোক্তার কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ চাইতে পারবে।
জানা গেছে, এই আইনটি পাস হওয়ার পর কোনো রেস্তোরাঁ যদি খাবার অপচয় করা আটকাতে না পারে, অর্থাৎ খাবার অপচয়ের অভিযোগ প্রমাণ হলে রেস্তোরাঁকে ১০ হাজার ইউয়ান বা এক লাখ ২৯ হাজার টাকার বেশি পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। আর কোনো টিভি চ্যানেল, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বা রেডিও মাধ্যম যদি নিষেধ সত্ত্বেও বেশি খাওয়ার ভিডিও প্রোমোট করে, তা হলে তার শোটি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। সাসপেন্ড হতে পারে চ্যানেল।
এই আইন নিয়ে অনেকেই খুশি হলেও, অনেকেই আবার একে সেভাবে স্বাগত জানাননি। অনেকেরই দাবি— কম খাবার সার্ভ করার বিষয়টি একটু ভেবে দেখা উচিৎ। এর ফলে অনেক রেস্তোরাঁই বেশি দামে কম খাবার বিক্রির সুযোগ পাবে। তা ছাড়া কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানই চাইবে না বেশি খাবারের জন্য ভোক্তার ওপর জরিমানা করতে।
২০১৫ সালে চায়না অ্যাকাডেমি সায়েন্সে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ১৭ থেকে ১৮ মিলিয়ন টন খাবার নষ্ট হয় বেইজিং ও সাংহাইয়ে। এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, বেশিরভাগই ভাত ও নুডলস নষ্ট হয়। আর মাংস নষ্ট হয় ১৮ শতাংশ। ফলে প্রশাসন মনে করছে, এ ধরনের পদক্ষেপে বিপুল খাবার বাঁচানো যেতে পারে।