গির্জায় যৌন নির্যাতন : জার্মানির প্রধান ধর্ম যাজকের পদত্যাগ
জার্মানির রোমান ক্যাথলিক ধর্ম যাজকদের অন্যতম মিউনিখের কার্ডিনাল রেইনহার্ড মার্ক্স। তিনি সম্প্রতি পোপ ফ্রান্সিসের কাছে এক চিঠিতে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পোপকে ২১ মে লেখা ওই চিঠিটি প্রকাশ করা হয় গত শুক্রবার।
চিঠিতে রেইনহার্ড মার্ক্স জানিয়েছেন, গির্জার সদস্যদের সংঘটিত যৌন নির্যাতনে নিজের ব্যর্থতার দায়টুকু তিনি নিতে চান। তিনি মিউনিখ এবং ফ্রাইসিং-এর আর্চবিশপের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছেন।
গির্জা এখন একটি ‘কানা গলিতে’ পৌঁছে গেছে বলেও মনে করেন মার্ক্স। এই পদত্যাগের ঘটনা নতুন শুরুর জন্য গির্জাকে উৎসাহিত করবে বলেও মনে করেন তিনি। খবর ইউরো নিউজ ও বিবিসির।
নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে পোপ ফ্রান্সিসকে দেওয়া চিঠিতে মার্ক্স লিখেছেন, এটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ যে, গত কয়েক দশকে গির্জার কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত যৌন নির্যাতনের ফলে যে বিপর্যয় ঘটেছে, আমি তার দায় ভাগ করে নিতে চাই।’
রেইনহার্ড মার্ক্স মিউনিখের আর্যবিশপ, তাই তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি এখনও বিবেচনায় রেখেছেন পোপ ফ্রান্সিস।
মার্ক্স জানান, গত ১০ বছরের বিভিন্ন তদন্ত ও প্রতিবেদন দেখে এটা তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, ক্যাথলিক চার্চে কেবল ‘ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক দুর্বলতা’ নয় বরং ‘প্রাতিষ্ঠানিক ও পরিচালনাগত’ দুর্বলতাও রয়েছে।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘সাম্প্রতিক বিভিন্ন আলোচনায় দেখা গেছে অনেকেই এই সংকটে নিজেদের ও প্রতিষ্ঠানের দায় স্বীকার করতে চান না। এর ফলে তারা যেকোনো সংস্কারের বিরোধিতা করেন।’
২০১৮ সালে ক্যাথলিক চার্চের অনুমোদিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৯৪৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জার্মানিতে তিন হাজার ৬০০-এর বেশি শিশু রোমান ক্যাথলিক যাজকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের মধ্যে কেবল ৩৮ শতাংশের বিরুদ্ধে বিচার করা হয়েছিল, যার মধ্যে বেশিরভাগকে সামান্য সাজা দেওয়া হয়। যৌন নির্যাতনের শিকারদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল ছেলে এবং অর্ধেকেরও বেশি শিশুর বয়স ১৩ বা তার চেয়ে কম।
এর আগেও গির্জার কর্মকর্তাদের যৌন নির্যাতনের ঘটনায় সরব ছিলেন রেইনহার্ড মার্ক্স। গির্জার পক্ষ থেকে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। যৌন নির্যাতন বিষয়ে গির্জার বক্তব্যের প্রতিবাদে এপ্রিলে ফেডারেল ক্রস অব মেরিট পদক প্রত্যাখ্যান করেন এ যাজক।