ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, প্রতিবাদে তিন মার্কিন মুসলিমের মামলা
ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিন জন মার্কিন মুসলিম। তাঁদের অভিযোগ—আন্তর্জাতিক ভ্রমণ থেকে ফিরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্রে সীমান্ত কর্মকর্তারা তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন।
বার্তা সংস্থা এপি’র বরাতে সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা এ খবর জানিয়েছে।
খবর বলা হয়েছে, মিনেসোটা, টেক্সাস ও অ্যারিজোনার তিন ব্যক্তি লস অ্যাঞ্জেলেসের কেন্দ্রীয় আদালতে হোমল্যান্ড দপ্তরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করায় ক্যালিফোর্নিয়ায় এ মামলা করা হয়।
মামলায় তিন ব্যক্তি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত কর্মকর্তারা স্থলপথ দিয়ে সীমান্ত পারাপারে ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁরা মুসলমান কি না, মসজিদে যান কি না এবং কত বার নামাজ পড়েন, ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করে তাঁদের বিব্রত করেন। দ্য আমেরিকান লিবিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন ওই তিন ব্যক্তির প্রতিনিধিত্ব করছে। ইউনিয়ন জানায়, ওই মার্কিন নাগরিকদের এসব প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে তাঁরা ওই ব্যক্তিদের ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার এবং অসম আচরণের বিরুদ্ধে সুরক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করেছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরকে মামলার ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য ইমেইল দেওয়া হলেও, তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি বলে ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে।
মামলার বাদীদের মধ্যে অন্যতম মিনেসোটার ব্লুমিংটনের একটি মসজিদের ইমাম আবদুর রহমান এডেন কারিয়ে। মামলায় বলা হয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার সময় অন্তত পাঁচ বার তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
মামলার অন্য বাদী টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের প্লানো’র বাসিন্দা হামিম শাহ। তিনি ২০১৯ সালে সার্বিয়া ও বসনিয়া ভ্রমণ শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এলে, লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে অতিরিক্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। মামলায় জানানো হয়, মার্কিন কর্মকর্তারা হামিমকে তাঁর বিশ্বাস ও ধর্মীয় আচার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও তাঁর ফোন তল্লাশি করেন। দুই ঘণ্টা পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
হামিম শাহ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি ভাবতাম মার্কিন নাগরিক হওয়ার মানে হলো—আমরা নিজেদের পছন্দমতো যেকোনো ধর্ম অবাধে পালন করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতা এখনও তাঁকে তাড়া করে বেড়ায়।