প্রতিবছরই করোনা ফিরে আসতে পারে, বলছেন চীনের বিজ্ঞানীরা
চীনের শীর্ষ চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব প্যাথোজেন বায়োলজির একদল বিজ্ঞানীর দাবি অনুযায়ী, পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হবে না নভেল করোনাভাইরাস। ফ্লুর মতো প্রতিবছরই ফিরে আসবে করোনাভাইরাস। বিশ্বজুড়ে বিপুলসংখ্যক উপসর্গহীন করোনাজনিত কোভিড-১৯ রোগীর কারণে প্রতিবছর এ ভাইরাস ফিরে আসার আশঙ্কা রয়েছে এমনটাই দাবি করেছে চায়নিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সের অধীনে থাকা ইনস্টিটিউট অব প্যাথোজেন বায়োলজির গবেষক দল।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সমগোত্রীয় সার্স যেমন এসেছিল ১৭ বছর আগে, কিন্তু শেষও হয়ে গেছে, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে তেমনটি হবে না। সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হলে রোগটি ছড়ানো বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু করোনাভাইরাস অনেক ক্ষেত্রে উপসর্গহীন হওয়ার ফলে তা শনাক্ত করা কঠিন। তাই প্রাদুর্ভাব নির্মূল করাও প্রায় অসম্ভব।
যাদের শরীরে ভাইরাসের কোনো উপসর্গ নেই, অর্থাৎ যারা অ্যাসিম্পটম্যাটিক, তারাই এ রোগ বয়ে নিয়ে বেড়াবে। তাই করোনার জীবাণু নির্মূল সম্ভব নয়, এমনই জানাচ্ছেন চীনের গবেষকরা।
গবেষণায় আরো বলা হয়, লকডাউন করে রোগের প্রকোপ কিছুটা কমানো যাবে ঠিকই। তবে অনেক ক্ষেত্রেই বলা হচ্ছে, যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, বিশেষ করে যুবসমাজ, তাদের বাইরে যেতে দেওয়া হোক। অর্থাৎ করোনা ছড়িয়ে পড়ুক, এমনই চান গবেষকরা। কারণ, যত তাড়াতাড়ি এ রোগের মোকাবিলা করা যাবে, তত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যাবে।
গত মাসে একই রকম কথা বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ড. অ্যান্টনি ফসি। তিনি বলেছিলেন, নভেল করোনাভাইরাস মৌসুমি রোগের মতো ফিরে আসতে পারে প্রতিবছর।
পিকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হসপিটালের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ওয়াং গুইকিয়াং বলেন, ‘গরমে করোনাভাইরাস বাঁচতে পারে না, তা ঠিক। তবে এর জন্য প্রয়োজন ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ভাইরাসটিকে ৩০ মিনিট থাকতে হবে তাতে। এতটা গরম সেভাবে কোথাও পড়ে না।’
তাই বিশ্বজুড়ে, এমনকি গ্রীষ্ম মৌসুমেও, ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।