ভারতের রাজ্যসভায়ও পাস হলো নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল
ভারতের লোকসভার পর রাজ্যসভায়ও তুমুল বিতর্কের পর পাস হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল- সিএবি। রাজ্যসভায় বিজেপি সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ১২৫টি। ১০৫ জন সাংসদ ভোট দিয়েছেন বিলের বিপক্ষে।
এবার ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ স্বাক্ষর করলে বিলটি আইনে পরিণত হবে।
এর আগে গত সোমবার ভারতের লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করিয়ে নিতে সক্ষম হয় সরকারপক্ষ। কিন্তু রাজ্যসভায় বিজেপি সংখ্যালঘু থাকার ফলে সেখানে বিলটির গতি কি হতে চলেছে, সে দিকে নজর ছিল গোটা দেশের। মঙ্গলবারই জানা গিয়েছিল, প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করে ফেলেছে কেন্দ্রের শাসক দল। সেই মোতাবেকই রাজ্যসভায় পাস হয়ে গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বিলটি সিলেক্ট পাঠানোর দাবি তুলেছিলেন বিরোধীরা। কিন্ত ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে যায় তা। এরপর ১৪টি সংশোধনী প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যাত হয় ভোটাভুটিতে। তখনই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বিলটির ভাগ্য।
প্রায় আট ঘণ্টা বিতর্কের পর পাস হয় বিলটি। ভোটাভুটির সময় ২৪০ জন সাংসদের মধ্যে রাজ্যসভার অধিবেশনকক্ষে উপস্থিত ছিলেন ২৩০ জন। তার জেরে ম্যাজিক ফিগার নেমে দাঁড়ায় ১১৬। বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ১২৫টি। বিপক্ষে ভোট দেন ১০৫ জন সাংসদ।
ভোটাভুটি শুরুর আগেই সভাকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান শিবসেনার তিন সাংসদ। ছিলেন না বহুজন সমাজ পার্টি ও এনসিপির চার সাংসদও। তবে নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে মুসলিমদের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই বলে এদিন রাজ্যসভায় দাবি করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, বিলে দেশের মুসলিমদের কোনো ক্ষতি হবে না। তাঁরা এদেশের নাগরিক ছিলেন এবং থাকবেন। এনিয়ে দেশের একজন মুসলিমেরও শঙ্কার কোনো কারণ নেই। এ নিয়ে যা রটানো হচ্ছে তা ঠিক নয়। মোদি সরকারের নেতৃত্বে এদেশের মুসলিমরা নিরাপদ। কিন্ত তার অর্থ এই নয় যে বিশ্বের সব দেশের মুসলিমদের এদেশে আশ্রয় দিতে হবে।
অন্যদিকে এদিন এই বিল পাসের পর ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের অন্তর্বতী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, ভারতের সংবিধানের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন। এই বিল পাসের মাধ্যমে ভারতের বহুত্ববাদের ওপর নিম্নরুচি ও ধর্মান্ধতার জয় হয়ে গেল।