মানুষের বয়স ‘কমানো যাচ্ছে’, দাবি ইসরায়েলি বিজ্ঞানীদের
হাজার বছর ধরে মানুষ যে স্বপ্ন দেখে এসেছে, এবার তা-ই বাস্তবে করে দেখিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলি বিজ্ঞানীরা। ইসরায়েলের তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয় ও শামির মেডিকেল সেন্টারের এক যৌথ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তাঁরা বয়সকে উল্টো পথে হাঁটানোর উপায় খুঁজে পেয়েছেন। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলি এ গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন অধ্যাপক শাই এফরাতি ও আমির হাদান্নি। দ্বিমাসিক বায়ো-মেডিকেল জার্নাল ‘এইজিং’ গত ১৮ নভেম্বর তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করে।
ইসরায়েলি বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ষাটোর্ধ্ব স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদের ওপর হাইপারবারিক অক্সিজেন ট্রিটমেন্ট করেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, এতে দেখা যাচ্ছে, শুধু যে রক্তকণিকার বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকানো গেছে তা নয়, চেহারায় বয়সের ছাপ আর বাড়ছে না, বরং কমছে।
ইসরায়েলি বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, শারীরবৃত্তীয়ভাবে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে তরুণতর হচ্ছে বয়স্কদের রক্তকণিকা।
কীভাবে করা হয়েছে এই চিকিৎসা?
একটি প্রেসার চেম্বারে হাইপ্রেশার অক্সিজেনের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবকদের রাখা হয়। এর ফলে বুড়িয়ে যাওয়া ও অসুস্থতার মত দুটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া উল্টো পথে ফেরানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। ক্রোমোজোমের শেষে যে কমপাউন্ড স্ট্রাকচার থাকে সেই টেলোমেরেসের সংক্ষিপ্তকরণ হচ্ছে। এর পাশাপাশি বের করে দেওয়া হচ্ছে বুড়িয়ে যাওয়া ত্রুটিযুক্ত কোষ। স্বেচ্ছাসেবকদের রক্ত থেকে যে ডিএনএ পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে তাঁদের শরীরে বয়স্ক কোষের উপস্থিতি কমেছে ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ৬৪ থেকে তদূর্ধ্ব বয়সের ৩৫ জন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির ওপর ৬০টি হাইপারবারিক সেশনসের সিরিজ করেছেন বিজ্ঞানীরা। মোট ৯০ দিন ধরে চলেছে গোটা প্রক্রিয়া। পরীক্ষার শুরুতে ও শেষে তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পুরো পরীক্ষা শেষ হওয়ার কয়েকদিন পর নেওয়া হয়েছে রক্তের চূড়ান্ত নমুনা। তারপর বিভিন্ন সময়ের রক্তকণিকার ওপর এই ট্রিটমেন্টের প্রভাব কতটা পড়েছে সে পরীক্ষা চলেছে।
গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, গবেষণায় অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবীদের শারীরিক পরিবর্তন হওয়ার পর, বর্তমানে তাঁদের শরীরের কোষের গঠন ২৫ বছর আগের মতো হয়ে গেছে।
দুই গবেষকের একজন শাই এফরাতি তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আবিব ক্লিনিকস নামে একটি ক্লিনিকও চালান তিনি। এফরাতি বলেন, ‘আমরা (কেবল শারীরিক) ক্ষয়ের গতি মন্থর করছি না—আমরা সময়ের উল্টো দিকে যাচ্ছি।’