মিয়ানমার সীমান্তে টহল বাড়িয়েছে ভারত

মিয়ানমার সীমান্তে গতকাল শুক্রবার থেকে টহল বাড়িয়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। মিয়ানমারের সামরিক জান্তার আদেশ মানতে চান না এমন কিছু পুলিশ কর্মকর্তা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার পর সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য জানিয়েছে।
মিজোরাম রাজ্যের চাম্ফাই জেলার কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মারিয়া জুয়ালি টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, ‘বর্তমানে, আমরা আর কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। শুক্রবার থেকে ভারতের সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে পুলিশও টহলে অংশ নিয়েছে।’
মিয়ানমারে সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভে দমন-পীড়নের আদেশ মানতে নারাজ এমন অন্তত ৩০ জন নিম্ন পদের পুলিশ কর্মকর্তা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ভারতে ঢুকেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য রয়টার্সকে জানিয়েছেন ভারতের মিজোরাম রাজ্যের জ্যেষ্ঠ একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

ভারতের কেন্দ্র সরকারের আরেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মিয়ানমার থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বিক্ষোভকারীদের দমনে সামরিক জান্তার আদেশ মানতে রাজি নন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সে দেশে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালাতে বলা হচ্ছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে।
তবে পুলিশ কর্মকর্তাদের এই দেশত্যাগের বিষয়ে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি সামরিক জান্তার একজন মুখপাত্র।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে চলছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। রক্তক্ষয়ী এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক এবং আহত হয়েছেন অনেকে। সেনা অভ্যুত্থানের অবসান এবং দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ সামরিক বাহিনীর হাতে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৪ জনের বেশি। তবে, অন্যান্য প্রতিবেদনে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল গত বুধবার। মিয়ানমারের বিভিন্ন নগর ও শহরে সেদিন ৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন।