যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে বিদেশি শিক্ষার্থীদের
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব বিদেশি ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছেন, তাঁদের দেশে ফিরে আসতে হতে পারে।
যেসব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠান যদি অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেসব শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস বিভাগ। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ অনলাইন ক্লাসের দিকে ঝুঁকে যাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত এসেছে। গতকাল সোমবার এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও কাস্টমস বিভাগ। এতে করে হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থীর ওপর এর প্রভাব পড়তে যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সব ধরনের কোর্স অনলাইনে চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। হার্ভার্ডে সব ক্লাস হবে অনলাইনে। এমনকি যাঁরা ক্যাম্পাসে থাকেন, তাঁদেরও। এ কারণে তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকাটা এখন আর প্রয়োজনীয় কিছু নয়।
মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টম বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যেসব শিক্ষার্থীর কোর্স অনলাইনে চলবে কিংবা যাঁরা অনলাইনের কোর্সের জন্য ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের ভিসা দেবে না যু্ক্তরাষ্ট্র। অন্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতিও দেবে না। এ ছাড়া যাঁরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি, বিভিন্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম কিংবা নন-একাডেমিক কাজে অথবা কারিগরি শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন, তাঁদের করোনা মহামারির এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে যেতে হবে।
করোনার আবহে মার্কিন সরকারের এমন নির্দেশিকায় একদিকে যেমন বিপদে পড়ছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, তেমনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বাড়তি চাপ অনুভব করছে। তারা চাইছে পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাইছেন, করোনার আবহেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাক। গতকাল সোমবার অভিবাসন ও কাস্টমস বিভাগের বিবৃতি সামনে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রাম্প টুইটারে বিবৃতিটি শেয়ার করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আগামী ফল মৌসুমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতেই হবে। ডেমোক্র্যাটদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ট্রাম্প লেখেন, ‘রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে মরিয়া ডেমোক্র্যাটরা চান না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু হোক।’
ট্রাম্পের বিরোধীরা এই বিবৃতির জেরে ট্রাম্প প্রশাসনকে সমালোচনা করতে ছাড়েনি। বার্নি স্যান্ডার্স সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এই হোয়াইট হাউসের নিষ্ঠুরতার কোনো সীমা নেই।
এদিকে সরকারের এমন বিবৃতিতে অখুশি দি আমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশনও। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিত্বকারী এ সংস্থা সোমবারের এ বিবৃতিকে ‘ধোঁয়াটে ও ভয়াবহ’ বলে ব্যাখ্যা করেছে।
চার লাখ শিক্ষার্থী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেয়েছিল সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর। এমনিতেই এ বছর নতুন মৌসুমে করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সম্ভাবনা কম, তার মধ্যে এ নতুন বিবৃতিতে শিক্ষার্থী হারানোর আশঙ্কা করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।