১৫ বছরে ভয়াবহ মাত্রায় উজাড় হয়েছে আমাজন বনাঞ্চল
ব্রাজিলের আমাজনে ‘অরণ্যবিনাশ’ বা বন উজাড়ের মাত্রা গত ১৫ বছরের বেশি সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা-ইনপে’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইনপে’র প্রতিবেদনে দেখা গেছে—এক বছরে আমাজন বিনাশের হার ২২ শতাংশ বেড়েছে।
সম্প্রতি শেষ হওয়া কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনের সময় যেসব দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বন নিধনের অবসান এবং পুনরায় বনায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ব্রাজিল তার মধ্যে অন্যতম।
আমাজন বনাঞ্চল প্রায় ৩০ লাখ প্রজাতির গাছপালা ও প্রাণী এবং ১০ লাখ আদিবাসীর আবাসস্থল। এ বনাঞ্চল পৃথিবীর একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্বন কেন্দ্র, যা বৈশ্বিক উষ্ণতার গতি হ্রাস করে আসছে। আমাজনকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ বলা হয়ে থাকে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ সময়কালে আমাজন থেকে প্রায় ১৩ হাজার ২৩৫ বর্গকিলোমিটার হারিয়ে গেছে, যা ২০০৬ সালের পর থেকে সর্বাধিক।
আমাজন বনাঞ্চলবিষয়ক সাম্প্রতিক তথ্যকে ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখছেন ব্রাজিলের পরিবেশমন্ত্রী জোয়াকিম লেইট। তিনি বলেন, বনাঞ্চল ধ্বংসের ‘অপরাধ মোকাবিলায় আমাদের আরও সক্রিয় হতে হবে।’
তবে, ব্রাজিলের পরিবেশমন্ত্রী দাবি করেছেন—তথ্যগুলো ‘গত কয়েক মাসের পরিস্থিতির সঠিক প্রতিফলন নয়।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর আমলে আমাজন নিধনের পরিমাণ বেড়েছে। তিনি আমাজনে কৃষি ও খনির কার্যক্রমের পৃষ্ঠপোষক বলে বিবিসি জানিয়েছে।
আমাজনবিষয়ক তথ্য প্রকাশকারী সংস্থা ইনপে-কে জাইর বলসোনারো ভালো চোখে দেখেন না। ইনপে’র বিরুদ্ধে ব্রাজিলের সুনাম নষ্ট করার অভিযোগ এনে ২০১৯ সালে সংস্থাটির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন বলসোনারো।
কিন্তু, গ্লাসগোতে এ মাসে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে অন্যান্য দেশের সঙ্গে ব্রাজিলও ২০৩০ সালের মধ্যে বন নিধনের অবসান এবং পুনরায় বনায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি বড় ধরনের সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি পাউন্ডের সরকারি ও বেসরকারি তহবিলের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ তহবিলের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি পুনরুদ্ধার করতে, দাবানল মোকাবিলা এবং আদিবাসী সম্প্রদায়কে সহায়তা করতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেওয়া হবে।