‘মা বোমা’র সাতকাহন
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) নির্মূলে আফগানিস্তানে সবচেয়ে বড় অপারমাণবিক বোমা ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিক্ষেপ করা ওই বোমায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আফগান সরকারের দাবি, নিহতরা আইএসের সদস্য।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বোমা। এর নাম ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স এয়ার ব্লাস্ট (এমওএবি)। বিবিসি জানিয়েছে, সামরিক পরিভাষায় ওই বোমাকে বলা হয়েছে, ‘মাদার অব অল বোম্বস’ বা সব বোমার মা।
ব্যবহৃত বোমাগুলোর মধ্যে শীর্ষে
এমওএবি নামে ওই বোমার ওজন নয় হাজার ৮০০ কেজি। এটি বিস্ফোরকে ঠাসা। এ পর্যন্ত যত বোমা ব্যবহার করা হয়েছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড়। বোমাটি লম্বায় ৩০ ফুট। এ রকমটি একটি বোমা তৈরির জন্য খরচ হয় প্রায় ১৬ মিলিয়ন ডলার।
বড়সড় কলম!
বোমাটি দেখতে কলমের মতো। সামনের দিকটি ধারালো। এর শরীরে দুটি পাখাও আছে। এর বাইরের দিকটি অ্যালুমিনিয়ামে মোড়ানো। আর এ কারণেই এর বিস্ফোরণের মাত্রা আরো বেশি ছড়িয়ে যায়।
অন্য বোমার চেয়ে একটু আলাদা
এমওএবি যেকোনো গুহা, টানেলে প্রবেশ করে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। এসব এলাকা ধ্বংস করার জন্য এর জন্ম। অন্যান্য বোমায় যেমন সরু পথ, গুহা পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে না, সেখানে এমওএবি কার্যকর। আর এ কারণেই আফগানিস্তানের এক গুহামুখে তা নিক্ষেপ করা হয়।
ভয়াবহতা
এক মাইল এলাকার মধ্যে যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর এটি ১৮ হাজার পাউন্ড টিএনটি ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। ভূমিতে সবকিছু ধ্বংস করে দিতে সক্ষম বোমাটি। এমনকি ভূগর্ভস্থ বাংকার বা টানেলকেও ধ্বংসস্তূতে পরিণত করে দিতে পারে ওই বোমা।
তৈরির উদ্দেশ্য
আইএস নিধনের জন্য ওই বোমাটি বানানো হয়নি। ২০০৩ সালে বোমাটি প্রস্তুত করা হয়। ইরাক যুদ্ধে ব্যবহার ছিল এর উদ্দেশ্য। কিন্তু পরবর্তীতে তা আর ব্যবহৃত হয়নি।
প্রথম পরীক্ষা
২০০৩ সালে প্রস্তুত হওয়ার বছরই বোমাটির শক্তিমত্তা পরীক্ষা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় প্রথম পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
প্রেসিডেন্টের অনুমোদন দরকার নেই!
যত ভারীই হোক না কেন, বোমাটি পারমাণবিক বোমা নয়। পারমাণবিক উপাদান না থাকায় প্রেসিডেন্টের অনুমোদন ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্তৃপক্ষ তা ব্যবহার করতে পারে।