আর্থিক অনটনে শিশুর আত্মহত্যা

ঈদে নতুন জামা পায়নি। ঈদে কোরবানি দেওয়ার মতো অবস্থাও নেই। কষ্টটা সহ্য করতে পারছিল না ইয়েমেনের ১২ বছর বয়সি শিশু ওমর মোহাম্মদ আলী। গত মঙ্গলবার সারাদিন আলীকে পাওয়া যায়নি। পরে বাড়ির ছাদে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় আলীর লাশ।
দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শহর তাইজে এ ঘটনা ঘটে।
সাদিক আব্দুল্লাহ আল-কুবাতি নামে এক প্রতিবেশীর বরাত দিয়ে দ্য নিউ আরব এ খবর জানায়।
সাদিক আব্দুল্লাহ আল-কুবাতি বলেন, ইয়েমেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আর্থিক অনটনে আছেন আলীর বাবা। সাত সদস্যের ওই পরিবারকে চালাতে গিয়ে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। ঈদুল আজহায় কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্যও নেই ওই ভদ্রলোকের। জামা কাপড়ও কিনে দেওয়া অর্থ নেই তাঁর। এই অভাব অনটনে কষ্ট পাচ্ছিল আলী। আর এতেই সে আত্মহননের পথ বেছে নেয়।
শুধু ওমর নয়, দ্য নিউ আরবের খবরে বলা হচ্ছে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনে অনেকেই অভাব-অনটনে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। আইবিবি প্রদেশের ৪০ বছর বয়সী এক নারী তাঁর ৯ ও ১২ বছরের দুই মেয়েকে নিয়ে আত্মহত্যা করেন গত জুনে। আট মাসের বেতন না দেওয়ায় গত মে’তে দেশটির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গুলি করে আত্মহত্যা করেন।
২০১৪ সালে হুতি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের অধিকাংশ অঞ্চল দখল করে নিলে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর ২০১৫ সালে হুতি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে সৌদি ও তার মিত্ররা ইয়েমেনে বিমান হামলা শুরু করে। এরপর থেকেই সেখানে দরিদ্র দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা একেবারে ভেঙে পড়ে।
সৌদি জোট সরকারের হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার বেসামরিক নাগরিক মারা যান এবং গৃহহীন হন প্রায় ৬০ হাজার। বর্তমানে সেখানে খাদ্য সংকট-ওষুধ সংকট ও হাসপাতাল সৌদি বিমান হামলায় ধ্বংসের ফলে কলেরা মহামারি আকার ধারণ করেছে। কলেরায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় এবং মারা গেছে দুই হাজার।