রোহিঙ্গা নিধনের নিন্দা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসাও করা হয় দেশটির পক্ষ থেকে।
স্থানীয় সময় সোমবার এক বিবৃতিতে এসব কথা জানান হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ হুকাবি স্যান্ডার্স।
বিবৃতিতে সারাহ বলেন, ‘বার্মার রাখাইন প্রদেশে চলমান রোহিঙ্গা সমস্যায় বিরক্ত যুক্তরাষ্ট্র। ২৫ আগস্ট বার্মার একটি নিরাপত্তা ফাঁড়িতে হামলার জের ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর হামলার ফলে দেশ ছেড়েছে জনগোষ্ঠীটির কমপক্ষে তিন লাখ মানুষ।’
সারাহ আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগ থেকেই বোঝা যায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের রক্ষায় কাজ করছে না। দেশটির সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভুত হত্যা, গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া ও ধর্ষণের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র শঙ্কিত।
এছাড়া বিবৃতিতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা কতৃপক্ষকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সহিংসতা বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগ ঠেকাতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে সাহায্য পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা ও গণমাধ্যমকে আক্রান্ত এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের প্রশংসাও করা হয়।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের’ সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। সেখান থেকে পালিয়ে আসার রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে গ্রামের পর গ্রামে হামলা-নির্যাতন চালাচ্ছে। নারীদের ধর্ষণ করছে। গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ গত ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭০ জন ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, দুজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৪ সাধারণ নাগরিক।
মিয়ানমার সরকারের আরো দাবি, ‘বিদ্রোহী সন্ত্রাসীরা’ এখন পর্যন্ত রাখাইনের প্রায় দুই হাজার ৬০০ বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এখনো রাখাইন রাজ্যে থাকা মুসলিমদের মধ্যে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।