মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার চিন্তা
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন-হত্যা-ধর্ষণের ঘটনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের উপর শাস্তি হিসেবে নিষেধাজ্ঞার কথা চিন্তা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটন, ইয়াঙ্গুন ও ইউরোপে কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে এমন আভাস পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে এ ব্যাপারে এখনি কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র এ নিয়ে আলোচনায় বসবে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রধানসহ শীর্ষ জেনারেলদের পাশাপাশি উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ নেতাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
কূটনীতিকরা রয়টার্সকে বলেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রতীকী ধরনের হতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র মনে করে সহিংসতার জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দায়ী। এ কারণে সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফকে টার্গেট করা উচিত। তাঁর ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।
অপরদিকে ট্রাম্প সরকারের দুজন কর্মকর্তা বলেছেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার ফলে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ ও ভ্রমণ নিষিদ্ধ হতে পারে।
গত ২৫ আগস্ট থেকে নতুন করে সহিংসতা সৃষ্টির পর রাখাইন রাজ্য থেকে বিপদসঙ্কুল নদী ও সমুদ্র পথ পাড়ি দিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ ১৫ হাজার মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। পালিয়ে আসা এসব মানুষের অভিযোগ, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা পুরষদের ধরে নিয়ে হত্যা করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে। আর গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদী উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে।
গত ছয় সপ্তাহে বাংলাদেশে আসা এসব রোহিঙ্গা মানুষ উপকূলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অস্থায়ী আশ্রয়শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে; যেখানে এক মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।