আবদুল কালাম স্মরণে ছিটমহলে তোরণ
‘স্বপ্ন সেটাই, যেটা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না’—সদ্যপ্রয়াত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালামের স্মরণীয় এই উদ্ধৃতিকে তুলে ধরে ছিটমহলে নির্মিত হয়েছে তোরণ। ছিটমহল চুক্তি বাস্তবায়নের মুহূর্তে তাঁকে স্মরণ করছেন ভারতের ছিটমহলের বাসিন্দারা।
৬৮ বছরের পরাধীনতার পালা শেষ হতে চলেছে আজ শুক্রবার মধ্যরাতে। ঘড়ির কাঁটায় রাত ঠিক ১২টা বাজতেই পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্তির আনন্দে মেতে উঠবেন ভারতের ভূখণ্ডের ৫১টি ছিটমহলের বাসিন্দারা। এই মুক্তি আন্দোলনের অনুপ্রেরণা হিসেবে ভারতের সদ্যপ্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের স্মরণীয় উক্তি সামনে রেখে ছিটমহলের বুকে নির্মিত হয়েছে তোরণ। যে তোরণে লেখা রয়েছে কালামের সেই অনবদ্য উক্তি, ‘স্বপ্ন সেটাই, যেটা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না’।
মাথার ওপর রাষ্ট্র ফিরে পাওয়ার আনন্দে মাতোয়ারা ছিটের প্রতিটি মানুষ। ভারতে অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি এ দিন থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাসিন্দাও হচ্ছেন তাঁরা।
ছিটমহলবাসীর সংগ্রামের অন্যতম সংগঠন ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহসম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, ৬৮টি বছর ধরে যন্ত্রণা আর বঞ্চনার মধ্য দিয়ে জীবন পার হয়েছে তাঁদের। আজ চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে খাঁচাবন্দি পাখির মতো মুক্তির স্বাদ পাবেন এখানকার বাসিন্দারা।
আজ স্থানীয় চ্যাংড়াবান্ধা আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারত ও বাংলাদেশের ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের যে বৈঠকের কথা ছিল, তা অনিবার্য কারণে বাতিল করা হয়। আগামী ২ আগস্ট এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক চিরঞ্জীব ঘোষ বলেন, ওই বৈঠকের পর সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। তবে বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে যাঁরা ভারতে যাচ্ছেন, তাঁদের জন্য প্রাথমিকভাবে দিনহাটা মার্কেট কমপ্লেক্সের জায়গা এবং হলদিবাড়ী কৃষিফার্ম ও মেঘালিগঞ্জের কৃষিফার্ম ঠিক করা হয়েছে।
চিরঞ্জীব ঘোষ আরো বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় ছিটের বাসিন্দারা নভেম্বরের ১ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত ভারতে আসতে পারবেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার থেকেই কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা মহকুমার নলগ্রাম, ফলনাপুর, জোংরাসহ বিভিন্ন ছিটে উৎসব শুরু হয়েছে।
নলগ্রাম ছিটমহল সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান। নলগ্রাম ছিটের ইউনিট সম্পাদক আবদুল রশিদ জানান, ৩১ জুলাই মধ্যরাতের স্মৃতিকে আমরা জীবনে কোনো দিন ভুলব না। তাই এই স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখতে আমরা সবাই শামিল হব মধ্যরাতের ওই অনুষ্ঠানে।