রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার চুক্তি
রাখাইন রাজ্য থেকে সেনাবাহিনীর হামলা-নির্যাতন-ধর্ষণের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের তাঁদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি সই করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে দেশটির রাষ্ট্রীয় পরামর্শক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সু চির দলীয় কার্যালয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের কাজ শুরু করার কথা বলা হলেও এটি কবে নাগাদ শেষ হবে সেই ব্যাপারে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের পক্ষে সু চি প্রায় ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পক্ষে এ এইচ মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের পক্ষে কাইয়ো থিন সোয়ে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, শিগগির রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করবে মিয়ানমার। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হবে।
গত ২৫ আগস্ট থেকে সহিংসতার শিকার হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তাদের কক্সবাজারে অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৩৬ হাজার ৩৭৩ জন এতিম শিশুকে শনাক্ত করা হয়েছে।
এই ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদি উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মিয়ানমার ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি পরিহার করার পাশাপাশি এই জনগোষ্ঠীকে নিজেদের দেশের নাগরিক বা স্বতন্ত্র নৃগোষ্ঠী বলেও স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়।
এর মধ্যে গতকাল প্রথমবারের মতো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতায় জাতি নির্মূলের উপাদান পাওয়া গেছে।