মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ
দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছরের মাথায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি থিন কিউয়ে পদত্যাগ করেছেন।
আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির কার্যালয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ পদত্যাগের কথা জানায়।
পাঁচ দশক ধরে সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে জিতে দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টি (এনএলডি) ক্ষমতায় এলে ২০১৬ সালের ৩০ জুন থিন কিউয়ে রাষ্ট্রপতির শপথ নেন।
সুচির ব্যক্তিগত বাল্যবন্ধু, ঘনিষ্ঠ পরামর্শক এমনকি কখনো কখনো চালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ৭১ বছর বয়সী থিন কিউয়ের এই পদ ছিল অনেকটাই আনুষ্ঠানিক।
ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ে এবং দুই সন্তান বিদেশি হওয়ায় মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী অং সান সুচির দেশটির সর্বোচ্চ পদে বসার কোনো অধিকার ছিল না। তিনি রাষ্ট্রীয় পরামর্শক হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলান।
পদত্যাগের পক্ষে কোনো কারণ উল্লেখ না করা হলেও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চলতি দায়িত্ব-কর্তব্য থেকে বিশ্রাম নিতেই’ থিন কিউয়ে পদত্যাগ করেছেন।
স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে কয়েক মাস ধরে থিন কিউয়ের শারীরিক অসুস্থতার কথা প্রচার করা হলেও তাঁর কার্যালয় থেকে এ ধরনের বিষয় অস্বীকার করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সংবিধানের ৭৩ (বি) ধারা অনুযায়ী, সাত কর্মদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদ পূরণ করতে হবে।
দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক জেনারেল মিন্ট শোয়ে। তিনি সামরিক বাহিনীর মনোনীত। নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ না নেওয়া পর্যন্ত তিনিই দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগে পর অং সান সুচি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন এনএলডি মেম্বার, বা এমন একজন যিনি এনএলডি প্রতি নীতিনিষ্ঠ’
সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতন-ধর্ষণের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গার বাস্তুচ্যূত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনায় সারা বিশ্বে ব্যাপক সমালোচনা মুখে পড়েন অং সান সুচি। সামরিক বাহিনী সঙ্গে ক্ষমতার ভাগাভাগি করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সুচির দলও এ ঘটনায় কখনো নীরব, কখনো সমর্থন জুগিয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।