শ্রীলঙ্কার সেই দুই ইসলামী সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা
শ্রীলঙ্কায় গির্জা ও হোটেলে সিরিজ বোমা হামলায় সন্দেহভাজন দুই ইসলামী সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। সংগঠন দুটি হলো ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে) ও জামায়াত ই মিল্লাতু ইব্রাহিম (জেএমআই)।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈথ্রিপালা সিরিসেনা তাঁর বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এ দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। আজ রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে এ দুই সংগঠনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকায় কর্তৃপক্ষ তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারছিল না।
পুলিশের ধারণা, সন্দেহভাজন হামলাকারী ও এ হামলার মাস্টারমাইন্ড জাহরান হাশিম ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে) নামে ওই সংগঠনকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
এর আগে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে হামলায় জড়িত সাতজনের ছবি প্রকাশ করে। ওই সাতজনের মধ্যে জাহরান হাশিম নামের ওই ব্যক্তিও ছিলেন।
শ্রীলঙ্কার সরকার বলছে, জাহরান হাশিম গত রোববার বোমা হামলার সময় নিহত হন। কলম্বোর সাংরি-লা হোটেলে তিনি হামলা চালিয়েছিলেন বলে জানানো হয়। জাহরান হাশিম অনেক আগে থেকেই ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য বিতর্কিত ছিলেন। এমনকি তাঁর ব্যাপারে এর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্কও করা হয়েছিল।
তবে জামায়াত ই মিল্লাতু ইব্রাহিম (জেএমআই) নামে ওই ছোট ইসলামী সংগঠনের ব্যাপারে তেমন কিছু জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, এই সংগঠনটির সদস্যরাও আত্মঘাতী হামলায় অংশ নেয়।
এদিকে এ হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার আনাচে-কানাচে অভিযান চালাচ্ছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ১০ হাজার সদস্য।
এরই মধ্যে সন্দেহভাজন ১০০ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আটকদের মধ্যে সিরিয়া ও মিসরের নাগরিকও রয়েছেন।
এদিকে গত শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বাত্তিকালোয়া শহরে নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলিতে ছয় শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সুমিত আতাপাত্তু জানান, অভিযানের সময় জঙ্গিরা তিনটি বিস্ফোরণ চালালে গোলাগুলির সূত্রপাত হয়।
নিহত জঙ্গিরা ন্যাশনাল তৌহিদ জামাতের (এনটিজে) সদস্য বলে জানান সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সুমিত আতাপাত্তু। নিহতদের মধ্যে তিন আত্মঘাতী বোমারু রয়েছে বলে জানায় দেশটির পুলিশ।
শ্রীলঙ্কায় ১৪০ উগ্রপন্থীর সঙ্গে আইএসের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ। সুমিত জানান, এই উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধেই এ অভিযান।
গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডেতে শ্রীলঙ্কায় গির্জা ও হোটেলে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় সর্বশেষ নিহতের সংখ্যা ২৫৩ বলা হয়েছে। এদের মধ্যে বিদেশিও আছেন।