মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিচার নিয়ে সন্দিহান হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
মিয়ানমারের একটি গ্রামে সেনাদের কার্মকাণ্ডের বিচার করার যে পরিকল্পনা দেশটির সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে, তা নিয়ে সোমবার সন্দেহ প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ওই গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রায় চারশ সদস্য নিহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তদন্তে দেখা গেছে যে রাখাইন রাজ্যের ওই গ্রামে আদেশ যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। তারা ওই অপরাধ বিষয়ে কোনো তারিখ বা অন্য কোনো তথ্য দেয়নি। তবে বলছে, গোতাবিন গ্রামের কিছু ঘটনায় নির্দেশনা অনুসরণে দুর্বলতার ঘটনায় সামরিক শৃঙ্খলার সাথে সঙ্গতি রক্ষার জন্য একটি সামরিক আদালত গঠন করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস গত বছরের জানুয়ারিতে জানায়, ওই গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনী বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল এবং নিহতদের কমপক্ষে পাঁচটি গণকবরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যারা নিজ দেশে তাতমাদাও হিসেবে পরিচিত তারা এ প্রতিবেদন অস্বীকার করেছিল। তাদের নতুন ঘোষণাটি ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কি না, তা পরিষ্কার নয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সোমবার বলেছে, এ ঘোষণা সেনাবাহিনীর আচরণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত করে না, যারা দুই বছর আগে নিজেদের দাবি অনুযায়ী চালানো বিদ্রোহীবিরোধী অভিযানে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে। এ অভিযানের ফলে সাত লাখের অধিক রোহিঙ্গাকে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপপরিচালক ফিল রবার্টসন এক ই-মেইলে বলেন, ‘যখন আমরা মানুষ ও তাদের সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দেওয়া হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মতো নৃশংসতার কথা বলছি তখন কিছু সৈনিকের কোর্ট মার্শাল করার তাতমাদাওয়ের সিদ্ধান্ত খুব একটা যথেষ্ট নয়। এ কোর্ট মার্শালকে দেখে মনে হচ্ছে এটি কিছু নিচের স্তরের বলির পাঁঠাকে উৎসর্গের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নজর সরিয়ে দেওয়ার আরেকটি খেলা মাত্র।’
সেনাবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারদের শাস্তি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘আপনি বলতে পারেন তাতমাদাও আন্তরিক নয়। কারণ তারা তাদের সার্বিক অভিযান পর্যালোচনা করতে অস্বীকার করেছে এবং এসব কোর্ট মার্শালের কার্যপ্রণালি মানুষ ও গণমাধ্যম থেকে আড়াল করে লুকিয়ে রেখেছে,’ উল্লেখ করে রবার্টসন বলেন, এ পদক্ষেপ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আচরণে কোনো পরিবর্তন আনবে- সেটা ভেবে কারো বোকা হওয়া উচিত হবে না। এ সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের অধিকার লঙ্ঘনের কথাই এখনো অস্বীকার করে এবং তাদের অপরাধের সব আন্তর্জাতিক জবাবদিহি এড়াতে কৌশল করে যাচ্ছে।