পাকিস্তানের এক শহরে ৯০০ শিশু এইচআইভি পজিটিভ

পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের লারকানা জেলার একটি শহর রাতোদেরোর প্রায় ৯০০ শিশুর শরীরে এইচআইভি ভাইরাস পাওয়া গেছে। কঠিন জ্বরে শয্যাশায়ী এই শিশুদের নিয়ে বিপাকে রয়েছে পরিবারগুলো। গত এপ্রিলে বিষয়টি নিয়ে হৈ চৈ হলে স্থানীয় প্রশাসন এক চিকিৎসককে দায়ী করে। ওই চিকিৎসক ইঞ্জেকশনের একই সিরিঞ্জ বহু রোগীর শরীরে ব্যবহার করেছেন।
সরকারি হিসাবে, এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত শহরের এক হাজার ১১২ জনের এইচআইভি পজিটিভ এসেছে। এদের প্রায় ৯০০ জনেরই বয়স ১২ বছরের নিচে। প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে ধারণা করছে সেখানকার স্বাস্থ্য খাতে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলো।
শহরটির দরিদ্র পরিবারগুলোর কাছে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সহজলভ্য ও জনপ্রিয় হিসেবে পরিচিত ডা. মুজাফফর ঘাংরো। তিনি একই সিরিঞ্জ দিয়ে ইঞ্জেকশন দিয়ে থাকেন। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব শিশু আক্রান্ত হয়েছে, তার প্রায় সবাই কোনো না কোনো সময় ঘাংরোর কাছে চিকিৎসা নিয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিক গুলবাহার শেখ এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন করলে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। প্রতিবেদনে কাজ করার আগে নিজের পরিবারের সবার এইচআইভি পরীক্ষা করান সাংবাদিক গুলবাহার শেখ। এতে তার দুই বছর বয়সী শিশু সন্তানের এইচআইভি পজিটিভ ধরা পড়ে। তিনিও তাঁর সন্তানকে ডা. ঘাংরোর কাছে নিয়েছিলেন। ফলে সরকারি কর্মকর্তাদের সন্দেহকে অমূলক বলা যাচ্ছে না।
ডা. ঘাংরোকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর তাঁর বিচার চলছে। তবে ঘাংরো নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন।
২০১০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পাকিস্তানে এইচআইভি ভাইরাসবাহী ও এইডস আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার। তবে এবার রাতোদেরোয় যা ঘটল তা নজিরবিহীন। এত বেশি সংখ্যক শিশু কখনোই একযোগে এইচআইভি আক্রান্ত হয়নি। ২৫ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৫ জন শিশু এ কারণে মারা গেছে।