থাইল্যান্ডকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে যে বিজ্ঞাপন
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/01/08/photo-1452264197.jpg)
এই ক্রিম ব্যবহার করলে চাকরি পাওয়া যাবে। তিন বছরের মধ্যে গাড়ি-বাড়ি সব হবে। এমন প্রলোভন দেখানো রং ফরসাকারী ক্রিমের বিজ্ঞাপন টেলিভিশন খুললেই আমরা দেখতে পাই। থাইল্যান্ডে এ ধরনের একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ক্ষুব্ধ অনেকের অভিযোগ, বিজ্ঞাপনটি সমাজের ক্ষতি করছে। বর্ণবাদী ধারণাকে জিইয়ে রাখছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের সৌন্দর্যবর্ধনকারী পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি সিউল সিক্রেটের তৈরি ‘স্নোজ’ ক্যাপসুলের বিজ্ঞাপন নিয়েই এই সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
৩০ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপনটিতে দেখা যায়, একজন ফ্যাকাশে বর্ণের অভিনেত্রীর গায়ের রং কম্পিউটার গ্রাফিকসের মাধ্যমে ধীরে ধীরে কালো করে দেওয়া হয়। এরপর অন্য আরেক ফর্সা ত্বকের হাস্যোজ্জ্বল অভিনেত্রী ক্রিস হোরওয়াং ক্যাপসুল দেখিয়ে বলেন, ‘ফর্সা হলেই আপনি সফল হবেন।’ এর পাশাপাশি তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এই ক্যাপসুল ব্যবহার না করলে আপনার ত্বকের ফর্সা রং হারিয়ে যেতে পারে।’
তাঁর পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা কালো বর্ণের ওই অভিনেত্রীকে দেখা যায়, তিনি আড়চোখে তাঁর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। ওই ক্যাপসুল পাওয়ার পর আবার তাঁর গায়ের রং ফর্সা হয়ে যায়।
থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার অনেক দেশেই রং ফর্সাকারী পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছেন দর্শকরা।
থাইল্যান্ড থাম্মাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক ইউকতি মুকদাউইজিত্রা বলেন, ‘আমি মনে করি, বিজ্ঞাপনটি নিতান্তই কুৎসিত- থাইল্যান্ডে এখনো এই ধরনের বিজ্ঞাপন তৈরি হয়- এ এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই বিজ্ঞাপন বর্ণবাদের একটি ধরনকে প্রতিনিধিত্ব করে যা থাইল্যান্ডে কয়েক শতাব্দী ধরে বিরাজমান। থাইল্যান্ডে ফর্সা রংকে মর্যাদা ও আভিজাত্যের প্রতীক মনে করা হয়।’
থাইল্যান্ডে বর্ণবাদী বিজ্ঞাপন নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে ডানকিন ডোনাটের একটি বিজ্ঞাপনে মুখে কালো রং করা এক মডেলকে দেখা যায়। তা নিয়ে বিতর্ক উঠলে প্রতিষ্ঠানটি ক্ষমা প্রার্থনা করে। ওই বছরই ইউনিলিভার একটি রং ফরসাকারী ক্রিমের বিজ্ঞাপনে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি প্রদান করার ঘোষণা দিয়ে সমালোচিত হয়।