পাকিস্তানের সিন্ধুতে বিয়ে করার অনুমতি পেল হিন্দুরা
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে হিন্দুরা আইনগতভাবে বিয়ে করার অনুমতি পেয়েছে। দেশটিতে প্রথমবারের মতো এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
প্রাদেশিক পার্লামেন্টে গত সোমবার এ সংক্রান্ত একটি বিল পাস করেছেন আইনপ্রণেতারা। সিন্ধুতে প্রায় ৩০ লাখ হিন্দুর বসবাস।
মানবাধিকারকর্মীরা জানিয়েছেন, এ ধরনের আইন ছাড়া হিন্দু নারীরা ধর্মান্তরকরণ, অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার হয়ে আসছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টও একই ধরনের আইন প্রণয়নের কথা ভাবছে।
পাকিস্তানের অন্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী খ্রিস্টানদের বিয়ের আইন রয়েছে ঔপনিবেশিক আমল থেকে। তবে এত দিন পর্যন্ত পাকিস্তানে বিয়ে নিবন্ধন করার কোনো আইনি কাঠামো ছিল না।
সিন্ধু প্রদেশের নতুন আইন অনুযায়ী, ১৮ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে কোনো হিন্দু নারী তাঁর বিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন।
তবে আইনে একটি বিতর্কিত ধারা রাখা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে কোনো দম্পতি ধর্ম পরিবর্তন করলে এ বিয়ে বাতিল হয়ে যাবে।
দীর্ঘ বহু দশক ধরে পাকিস্তানের হিন্দুরা বৈষম্য ও ধর্মী নিগ্রহের শিকার হয়ে আসছে। সিন্ধু প্রদেশের গ্রামাঞ্চলে হিন্দু তরুণীরা অহরহ অপহরণের শিকার হন, জোরপূর্বক তাদের ধর্মান্তরিত করা হয় এবং কম বয়সী নারীদের বিয়েতে বাধ্য করা হয়। এ ধরনের অপরাধের জড়িত দুর্বৃত্তরা প্রায়ই স্থানীয় মাদ্রাসার মোল্লাদের কাছ থেকে সমর্থন পেয়ে থাকে।
প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, নতুন আইনের ফলে এ ধরনের অপরাধ কমে যাবে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এটা একটি প্রগতিশীল পদক্ষেপ।
দেশটির মানবাধিকার কমিশনের কর্মকর্তা জোহরা ইউসুফ বলেন, ‘আইন পাস হওয়া একটি বিষয়, এখন দেখতে হবে কর্তৃপক্ষ এটাকে কীভাবে বাস্তবায়ন করছে।’
পাকিস্তান হিন্দু পরিষদের প্রধান ড. রমেশ কুমার ভানকোয়ানি বলেন, হিন্দু নারীদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ বন্ধে এ পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়। অনেক দম্পতি বলেছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ভিসার জন্য আবেদন ও জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া ও সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তাঁরা ঝামেলায় পড়ছেন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের শেষদিকে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ হিন্দু।